মাগুরার সনোপ্লাস ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্সে প্রসূতি রোগীর রক্ত পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট দেওয়ায় অভিযোগ করেছেন স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় মাগুরা সনোপ্লাস ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্স এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, শহরের কাশিনাথপুর গ্রামের অর্পাকে (প্রসূতি রোগী) নিয়ে আসেন তার স্বামী সোহেল রানা ও অন্যান্য স্বজনরা। এ সময় সনোপ্লাস ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্সে মিলন রিপেজেন্টেটিভের সমন্বয়ে রক্ত পরীক্ষা করতে দিলে দায়িত্বরত স্টাফরা তাকে ‘বি’ পজেটিভ রিপোর্ট দেয়। কিন্তু রোগীর ব্লাড গ্রুপ ছিল ‘ও’ পজেটিভ ছিল। এতে রোগীর সদস্যদের সন্দেহ হলে তিনি পার্শ্ববর্তী সালেহা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পুনরায় রক্ত পরীক্ষা করালে সেখানে ‘ও’ পজেটিভ রিপোর্ট আসে।
এ সময় রোগীর স্বজনরা ভুল রিপোর্টের কারণ জানতে চাইলে প্যাথলজি বিভাগে কর্মরতরা তাদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করে।
রোগীর স্বামী সোহেল রানা বলেন, সনোপ্লাস ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্সের রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী আমি ‘বি’ পজেটিভ রক্ত ম্যানেজ করে স্ত্রীর শরীরে প্রবেশ করাতে যাই এ সময় অপারেশন কাজে নিয়োজিত ডাক্তার মুক্তাদুর রহমান আমাদেরকে পুনরায় রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে নিয়ে আসতে বলেন। ডাক্তারের কথা অনুযায়ী রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে নিয়ে আসলে ডাক্তার বলেন পূর্বের রক্তের গ্রুপ ভুল ছিল। আমার স্ত্রী অর্পা গুরুতর অসুস্থ আমি এই অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে সঠিক ন্যায়বিচার দাবি করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগীদের এনে ওই সব রোগীর চিকিৎসা করা হচ্ছে মাগুরার একাধিক অনিবন্ধিত এই ক্লিনিকে। কোনো কোনো ক্লিনিকে ভুয়া ডাক্তার অস্ত্রোপচার পর্যন্ত করে। মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি সার্টিফিকেট না নিয়ে তারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে রোগী দেখছেন। দালালরা রোগীদের বুঝিয়ে ভুয়া বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের কাছে নিয়ে যায়।
মাগুরার ডায়াগনস্টিক ব্যবস্থা খুবই দুর্বল উল্লেখ করে সিভিল সার্জন ডা. মো. শামীম কবির বলেন, বেশকিছু ক্ষেত্রে আমরা নিশ্চিত হতে পারছি না রোগীর কী রোগ হলো। একই পরীক্ষা ভিন্ন ভিন্ন ল্যাবে আলাদা আলাদা রেজাল্ট আসছে। ফলে রোগ নির্ণয়ে ভুল হয়। আবার রোগী ওষুধ খাচ্ছেন রোগ সারছে না। এতে রোগীর সন্দেহ বা সংশয় তৈরি হয়। তখন রোগী বিদেশমুখী হন। বিদেশে গেলে ওখানকার চিকিৎসকরাও প্রশ্ন তুলেন বাংলাদেশে কেন রোগ ধরতে পারলো না। তাহলে প্রশ্ন ওঠে বাংলাদেশি ডাক্তাররা কী লেখাপড়ায় খারাপ? একদম না। সিনিয়ররা বেশির ভাগ খারাপ না। যদিও জুনিয়রদের নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। রক্তের পরীক্ষা মানসম্পন্ন না। উন্নত বা গোল্ড স্ট্যানডার ল্যাব নেই। রেফারেন্স ল্যাবও সেই রকম নেই। দেশের ডায়াগনস্টিক টেস্টের দুর্বলতার কারণে রোগ ধরতে না পারায় দায়টা শেষ পর্যন্ত চিকিৎসকের উপরেই বর্তায়। ফলে চিকিৎসক এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর আস্থা কমে যাচ্ছে।
ইএইচ