শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলক ও বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণসহ নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে বরিশালে পালন করা হয়েছে মহান বিজয় দিবস।
দিবসটি উপলক্ষ্যে সোমবার সকালে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জেলা পুলিশ লাইন্স মাঠে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্যদিয়ে মহান বিজয় দিবসের সূচনা করা হয়।
একই সময়ে সব সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সকাল সাড়ে ৬টা থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সংলগ্ন শহিদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানানো হয়।
অপরদিকে সকাল সোয়া ৭টা থেকে শহরের ৩০ গোডাউন এলাকা সংলগ্ন বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এ সময় পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড বরিশাল জেলা ও মহানগর শাখা, বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জের ডিআইজি, মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দফতর ও প্রতিষ্ঠান রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শহিদ এডিসি কাজী আজিজুল ইসলামের কবর জিয়ারত ও দোয়া-মোনাজাত করা হয়।
সকাল ৯টায় নগরের ঐতিহাসিক বেলস্ পার্কে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে দিবসটি উপলক্ষ্যে বরিশাল জেলা যুবদলের আনন্দ মিছিল বের করা হয়। বরিশাল উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক কায়সার আহম্মেদ এর নেতৃত্বে একটি আনন্দ মিছিল বের করেন দলটির নেতাকর্মীরা।
মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বরিশাল বিএনপির দলীয় কার্যালয় গিয়ে শেষ হয়।
অপরদিকে দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও জেলা শিশু একাডেমিতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সিনেমা হলে বিনা টিকিটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক সরবরাহকৃত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী এবং উন্মুক্ত স্থানে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সেইসাথে শিশুদের জন্য প্লানেট পার্ক ও দুর্গাসাগর দিঘী উন্মুক্ত রাখা এবং বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়।
অপরদিকে দুপুর ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর জাহাজ জনসাধারণের দর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখার ব্যবস্থা করা হয়।
এছাড়া শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য ও জাতির শান্তি সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে সুবিধাজনক সময়ে স্থানীয় সকল মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বেলা ১১টায় জেলা পর্যায়ের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ইএইচ