চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম (৬ নং) ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মহসিন আলম মোহনকে জীবনের নিরাপত্তা ও আত্মসম্মান রক্ষায় নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে ত্যাজ্য করেছেন বাবা ছিদ্দিকুর রহমান।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ছিদ্দিকুর রহমান নিজেই। গত ১৫ ডিসেম্বর তিনি নোটারি পাবলিক কার্যালয় চাঁদপুর এর আইনজীবী একেএম লোকমান হোসাইন মাধ্যমে পুত্রকে ত্যাজ্যপুত্র সম্পর্কিত হলফনামা সম্পাদন করেন।
ওই হলফনামায় সাক্ষী হিসেবে ছিলেন, ছিদ্দিকুর রহমানের স্ত্রী ফাতেমা বেগম, মেয়ে সাহানা আক্তার ও আত্মীয় খলিলুর রহমান। ত্যাজ্য করা মো. মহসিন আলম (মোহন) ছিদ্দিকুর রহমান এর জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং ওই ইউনিয়নের সিংহেরগাঁও হামচাপুর গ্রামের ছৈয়াল বাড়ির বাসিন্দা।
ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, তার ছেলে গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর পলাতক রয়েছে। ছেলের সাথে ২০১৪ সালের পর সম্পর্ক নেই। কারণ তিনি অসুস্থ হওয়ার কারণে ছেলে মোহনকে খাজুরিয়া বাজারে তার নিজ ব্যবসা (হার্ডওয়্যার) দেখাশুনা করতেন। বিগত প্রায় ১০ বছরে মোহন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। নিজ ইচ্ছে বিয়ে করেন। লোকজনকে চাকরি দেওয়ার নাম করে বহু টাকা পয়সা আত্মসাৎ করেছে।
তিনি আরও বলেন, গত ৫ আগস্টের পর পাওনাদারসহ অন্যান্য লোকজন আমার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। আরও যারা টাকা পাবে তারা আমাকে এসে হুমকি ধমকি দিচ্ছে। যে কারণে আমি এখন বাড়ি থেকে বের হতে পারি না। আর আমার ছেলে বিগত দিনে তাকে লোকজনের টাকা ফেরতসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টাকা হিসাব চাইলে আমাকে এবং পরিবারের সদস্যদেরকে বেশ কয়েকবার প্রাণ নাশের হুমকি দেয়।
বাবা ছিদ্দিকুর রহমান হলফনামায় উল্লেখ করেন, নিজের জীবনে নিরাপত্তা এবং আত্মসম্মান রক্ষায় বাধ্য হয়ে আমি সবার সামনে আমার ছেলে মহসিনকে ত্যাজ্য পুত্র হিসাবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। আমার সমুদয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির আইনগত ও ওয়ারিশগত অধিকার এবং পিতা পুত্রের সম্পর্ক থেকে তাকে ত্যাজ্য ঘোষণা করিলাম। এখন থেকে মহসিন আলমের কোন অপকর্ম কিংবা দেনা পাওনার কোন দায়িত্বভার আমি বা আমার পরিবারের কোন সদস্য গ্রহণ করবে না।
এদিকে স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মো. মহসিন আলম (মোহন) সাবেক এমপি ড. মোহাম্মদ শামছুল হক ভুঁইয়ার সময়ে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ সাংবাদিক সফিকুর রহমান এমপি নির্বাচিত হলে যুবলীগের কমিটি থেকে বাদ পড়েন।
গত ৫ আগস্টের পর থেকে মো. মহসিন আলম (মোহন) স্ত্রীসহ পলাতক। তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর বন্ধ। যে কারণে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তার পিতা ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, মোহন কোথায় আছে আত্মীয় স্বজন কেউ বলতে পারে না।
বিআরইউ