কুমিল্লায় রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে ২৬ শতাংশ

জহিরুল হক রাসেল, কুমিল্লা প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪, ০৯:১৬ পিএম

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট অনুযায়ী কুমিল্লা জেলায় রেমিটেন্স (বৈদেশিক মুদ্রা) আসার পরিমাণ ২৬ শতাংশের বেশি বেড়েছে। গত বছর এই সময়ে যে পরিমাণ রেমিটেন্স ছিল তা এবছর ২৬ শতাংশ বেশি।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় এ অর্থবছরে জুলাই আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের পর রেমিটেন্সের আসার পরিমাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা গত বছর আসা প্রায় ১৩ মিলিয়ন ইউএস ডলার বা ১৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক রেহানুর ইসলাম।

বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী এবং জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত মেলায় সাংবাদিকদের তিনি এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, এ বছর সারা বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১ লাখের মত কর্মী বিদেশ গিয়েছে যার প্রায় ১০ শতাংশ বা এক লাখেরও বেশি কর্মী। গত নভেম্বর পর্যন্ত ৯১ হাজার ৩শ জন বিদেশে গিয়েছে। বিভিন্ন কাজে দক্ষ হয়ে বিদেশ গমন এবং বৈধ পন্থায় রেমিটেন্স পাঠানোর কারণে এ বছর বৈদেশিক মুদ্রায় প্রবাহ পরিমাণ বেড়েছে। এছাড়া জুলাই আগস্টের আন্দোলন পরবর্তী সময়ে মানুষ বেশি পরিমাণে
রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে।

জেলা জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো এর তথ্য মতে, ২০০৪ থেকে ২০২৪ এর নভেম্বর মাস পর্যন্ত কুমিল্লা থেকে ১৩ লাখ ৫০ হাজার ৬৮ জন অভিবাসী কর্মী বিদেশ গমন করেছেন।

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার জানান, কুমিল্লা থেকে উত্তরোত্তর অভিবাসী কর্মীর সংখ্যা বাড়ছে এবং এই জেলা থেকে রেমিটেন্স প্রবাহও বেড়েছে। যারা কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে প্রবাসে গমন করতে চান তাদের প্রতি আমাদের পরামর্শ তারা যেন যেকোন একটি বিষয়ে কাজের দক্ষতা অর্জন করে তারপর বিদেশ গমন করেন। তাহলে বিদেশে গিয়ে আয় রোজগার যেমন ভালো হবে, তেমনি দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর প্রবাহও সমৃদ্ধ হবে।

এদিকে অভিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, অভিবাসী কর্মীদের তাদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কেও জানতে হবে। এছাড়া বিদেশ থেকে পাঠানো রেমিটেন্স যেন কোন সফল বিনিয়োগ হয় সে বিষয়েও তাদের প্রশিক্ষণের বা জানার দরকার আছে। তা হলে অভিবাসীরা যে রেমিটেন্স পাঠাবেন তারপরও তাদেরকে যে মাঝে মাঝে দুর্দশার শিকার হতে হয়ে তা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

প্রবাসী মেলা ও অভিবাসন দিবস উপলক্ষ্যে কুমিল্লায় বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণকারী ৭ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। এর মধ্যে সংযুক্ত আরব অমিরাত (দুবাই) ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিতে সর্বোচ্চ ১১ কোটি ৬২ লাখ ৫২ হাজার ৯৭৩ টাকা পাঠিয়েছেন ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সির ফরহাদুল ইসলাম।

তিনি জানান, অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা রয়েছে। আমরা বাংলাদেশ ছাড়া দুবাই এবং মালয়েশিয়াতেও ফ্রিল্যান্সিং করে থাকি। যার মাধ্যমে দেশের তরুণরা উপকৃত হচ্ছে। দেশের বাইরে থেকে যে আয় হয় তা ব্যাংকের মাধ্যমেই দেশে পাঠাই। আমাদের প্রত্যাশা অভিবাসীরা যেন বৈধ পন্থায় দেশে রেমিটেন্স পাঠান। তাহলে এই বৈদেশিক মুদ্রা দেশের কাজে লাগবে।

ইএইচ