জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নে চর সগুনা এ.সি.এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহিদুল ইসলাম ও সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মুবাশ্বির হাসানের বিরুদ্ধে স্কুলভবন, বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ, ভুয়া নিয়োগ ও জাল সনদে চাকরির অভিযোগ উঠেছে।
এ নিয়ে গত (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মনোয়ার হোসেন মনু।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম ও অফিস সহকারী (কেরানি) মো. রাসেল মিয়াকে জাল সনদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে ধর্মীয় শিক্ষক (মৌলভী) মো. আব্বাস আলীর নিয়োগের সময় বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কথা বলে ৫ লাখ টাকা নিলেও স্কুলে জমা সাড়ে তিন লাখ। লাইব্রেরিয়ান পদে মোছা. লুৎফার নিয়োগের সময় ৭ লাখ টাকা নেয়া হলেও স্কুলে জমা মাত্র ২ লাখ।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, চর সগুনা এ.সি.এস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদুল ইসলাম বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ থেকে বরাদ্দকৃত ৩৩ লাখ টাকার কাজের মধ্যে ৭ লাখ টাকা নামমাত্র খরচ করেন। বাকী টাকা সেই সময় থাকা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোবাশ্বির হাসান মিলে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছে। স্কুলের বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের জন্য ৬লা খ টাকার মধ্যে মাত্র দেড় লাখ টাকা খরচ করে বাকী টাকা আত্মসাৎ করেছে প্রধান শিক্ষক ও সাবেক সভাপতি।
সহকারী শিক্ষক মঞ্জুরুল ইসলাম জাল সনদে চাকরি করছেন। প্রধান শিক্ষকের সহযোহিতায় বি.এড সনদ জাল থাকা সত্ত্বেও চাকরি করছেন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দলীয় পদেও রয়েছেন।
এ.সি.এস. উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী কেরানি মো. রাসেল রানার নিয়োগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোবাশ্বির হাসান মিলে এককভাবে নিয়োগ প্রদান করেছে। কেরানি পদে অন্য কোনো প্রার্থীকে এ পদে আবেদন করতে দেয়নি। বিদ্যালয়ের কেরানি ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তারা এই নিয়োগ দিয়েছে। গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়ের নিয়োগ বাণিজ্য, উন্নয়ন বরাদ্দ আত্মসাৎ করাসহ বিভিন্ন অপকর্ম করেছে।
অভিযোগকারী মনোয়ার হোসেন মনু বলেন, এতোদিন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রধান শিক্ষক, সাবেক সভাপতি নিয়োগ বাণিজ্য, উন্নয়ন বরাদ্দ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অপকর্ম করেছে। এতোদিন প্রতিবাদ করতে পারি নাই।
এ.সি.এস. উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী (কেরানি) মো. রাসেল রানা বলেন, আমার নিয়োগের সময় দুইবার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ৯ জন প্রার্থী আবেদন করেছিল। তারমধ্যে ৬ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। আপনারা ভালোভাবে খোঁজ খবর নিয়ে দেখতে পারেন।
জাল সনদে চাকরির বিষয়ে সহকারী শিক্ষক মঞ্জরুল ইসলাম বলেন, আমার সকল সনদ ঠিক আছে। আমাকে হয়রানি করার জন্য এ অভিযোগ দিয়েছে। আপনারা অনলাইনে সার্চ দিলেই আমার সনদের সত্যতা পাবেন।
অভিযোগের ব্যাপারে এ.সি.এস. উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, যেসকল অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। স্কুলের ভবন বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখানে আমি কীভাবে টাকা আত্মসাৎ করবো? উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব অভিযোগ করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আজাদুর রহমান ভূইয়া বলেন, একটা অভিযোগ ইউএনও স্যারকে দিয়েছে। আমি এখনো পাইনি। খোঁজখবর নিয়ে দেখবো আমি।
মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস. এম. আলমগীর বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি খোঁজখবর নেওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ইএইচ