কুড়িগ্রামে শতাধিক নারী-পুরুষদের নিয়ে দিনব্যাপী গ্রামীণ খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের ডাক্তারপাড়া গ্রামে দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন করে দুর্বার তারুণ্য বাংলাদেশ ও শহিদ ডা. ছফর উদ্দীন স্মৃতি সংঘ।
হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলা দেখতে সব বয়সী উৎসুক জনতা ভিড় জমায়।
সোমবার কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের ডাক্তারপাড়া গ্রামে দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন করে দুর্বার তারুণ্য বাংলাদেশ ও শহিদ ডা. ছফর উদ্দীন স্মৃতি সংঘ।
গ্রামীণ খেলাধুলা শেষে বিজয়ীদের মঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। গত তিন বছর ধরে এই গ্রামে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে আসছে সংগঠন দুটি।
গ্রামের মানুষরা সারাদিনের হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর এই বিনোদন আনন্দ যেন উৎসবে পরিণত হয়েছে। সকাল থেকে আশেপাশের গ্রামের খেলা প্রেমিক মানুষ ভিড় জমানো এখানে। এলাকার সব বয়সী মানুষের অংশ গ্রহণে সৃষ্টি হয় এক আনন্দঘনময় পরিবেশ। কিছুক্ষণের জন্য অনেকে যেন নিজের বয়স ভুলে ফিরে যান অতীতে কিংবা শৈশবে। অনুষ্ঠানে গ্রামটির বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুদের নিয়ে আয়োজন করা হয়। চোখ বেঁধে হাঁস ধরা, তৈলাক্ত কলা গাছ বেয়ে ওঠা, পানিতে বালিশ যুদ্ধ, হাড়িভাঙ্গা, সাঁতার, বিস্কুট দৌড়, যেমন খুশি তেমন সাজোসহ নানাধরণের বিনোদনমূলক খেলাধুলা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ¦ মো. মাহবুবুর রহমান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ মাহফুজার রহমান খন্দকার, বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের প্রতিনিধি এম.এ সাঈদ মিয়া,বিএনপি নেতা খলিলুর রহমান, দুর্বার তারুণ্য বাংলাদেশ ও শহিদ ডা. ছফর উদ্দীন স্মৃতি সংঘের সভাপতি কে.এম রেজওয়ানুল হক নুরনবী প্রমুখ।
খেলা দেখতে আসা আয়নাল হক বলেন, এসব খেলা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। এই খেলাগুলো গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। প্রায় ১০-১৫ বছর পর গ্রামের অতীত খেলা দেখে খুবই আনন্দ পেলাম।
শিক্ষার্থী শাহী জানায়, টিভিতে মাঝে মধ্যে এসব খেলা দেখি। এসব খেলার কথা অনেক শুনেছি। আজ নিজ চোখে দেখে খুব আনন্দ পেলাম। নতুন প্রজন্মের জন্য এসব খেলা টিকিয়ে রাখা উচিত।
দুর্বার তারুণ্য বাংলাদেশ ও শহিদ ডা. ছফর উদ্দীন স্মৃতি সংঘের সভাপতি রেজওয়ানুল হক নুরনবী বলেন, কালের বিবর্তনে গ্রামীণ খেলাধুলা হারিয়ে যাচ্ছে। আধুনিক যুগে মোবাইল ইন্টারনেটের কারণে এসব খেলা থেকে মানুষজন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে এ খেলার আয়োজন করা হয়। সরকার ও সচেতন মহলের উচিত গ্রামীণ খেলাধুলাকে বাঁচিয়ে রাখতে সুদৃষ্টি রাখা।
ইএইচ