গত কয়েকদিন ধরেই শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বিশেষ করে ছিন্নমূল ও চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ ও গবাদিপশু নিয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন।
বৃহস্পতিবার সারাদিনও শিবচরে কোথাও সূর্যের মুখ দেখা যায়নি।
গত কয়েকদিন থেকে ঘন কুয়াশা সঙ্গে শীতের তীব্রতা বেড়ে চলেছে। এতে শিবচর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ বেষ্টিত নদ-নদীর চরাঞ্চলের দুস্থ ও নিম্ন আয়ের মানুষ শীত বস্ত্রের অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
শিবচরে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মধ্যরাত থেকে পড়ছে ঘন কুয়াশা, বাড়তি ছিল ঠান্ডার মাত্রা। কুয়াশায় ঢাকা পড়ছে চারদিক। ফলে দিনের বেলায়ও হেড লাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন।
শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। এছাড়া শিশু ও বয়স্কদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলের মানুষরা। উষ্ণ কাপড়ের অভাবে দুস্থ ও অসহায় মানুষদের কষ্ট দিন দিন বেড়েই চলছে।
বাইক চালক খায়ের খান বলেন, হেডলাইট জ্বালিয়ে বাইক চালাচ্ছি। সামান্য দূরত্বেও কিছু দেখা যাচ্ছে না। হঠাৎ করেই কুয়াশায় চারপাশ ঢেকে গেছে। এ কারণে মহাসড়কে বাইক চলাচলও কম।
ইজিবাইক চালক হেলাল উদ্দিন বলেন, কুয়াশার কারণে সকালে রাস্তায় কিছুই দেখা যায় না। ধীরে ধীরে গাড়ি চালাতে হয়। বর্তমানে অতিরিক্ত গরম কাপড় পরতে হচ্ছে।
যাদুয়ারচর এলাকার দিনমজুর রনি মিয়া বলেন, শীতের কারণে মাঠে কাজ করতে কষ্ট হয়। দিনেও অনেক বেলা পর্যন্ত কুয়াশা থাকে। তাছাড়া অনুদান হিসেবে যে কম্বল পাই, তাতে শীত নিবারণ হয় না।
শিবচর উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানা গেছে, চলতি শীত মৌসুমে সরকারিভাবে এ পর্যন্ত উপজেলায় ৯ হাজারের মতো কম্বল এসেছে। সেগুলো ১৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। শীতবস্ত্রগুলো ইউনিয়ন ভিত্তিক চেয়ারম্যানদের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
শিবচর হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহেল বাকী জানান, মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের টিম দায়িত্ব পালন করছে। ভোরে মহাসড়কে প্রচুর কুয়াশা থাকে। ভোরে যানবাহন কম চলাচলের পাশাপাশি হেড লাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলে। হাইওয়ের একাধিক স্থানে আমাদের পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাজিবুল ইসলাম বলেন, সরকারিভাবে ৯ হাজারেরও বেশি শীতবস্ত্রের বরাদ্দ রয়েছে এ উপজেলায়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে দরিদ্র মানুষকে এই শীতবস্ত্র দেওয়া হয়েছে। এই শীতে যেন কোনো মানুষ কষ্ট না পায় সেদিকে লক্ষ্য করেই আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ইএইচ