আশপাশের ভবন ঝুঁকিতে, গ্যাস পানি বন্ধ

লক্ষ্মীপুরে ওয়ে হাউজিংয়ের বহুতল ভবনের পাইলিংয়ে সড়ক দেবে বিচ্ছিন্ন

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৫, ০২:২০ পিএম

লক্ষ্মীপুরে ওয়ে হাউজিং কোম্পানীর নিয়ম বহির্ভূত বহুতল ভবনের পাইলিংয়ের কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক দেবে বিচ্ছিন্নসহ পাশে থাকা দুটি দোকান ও একটি কবরস্থান ভেঙে গেছে। এতে আশপাশের ভবনগুলো ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। এ ঘটনায় গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ায় সহস্রাধিক পরিবারের রান্নাবান্না অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) সকালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রকৌশলী জুলফিকার জুয়েল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এর আগে বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাত ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার শাঁখারি পাড়া সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

পৌর কর্তৃপক্ষ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, ভেঙে যাওয়া দোকানগুলোর পেছনে একটি পুকুর রয়েছে। হাউজিংয়ের অনিয়ন্ত্রিত ফাইলিংয়ের কারণে মাটির তলদেশ পানির স্তর সৃষ্টি হয়। ভেক্যু দিয়ে সম্প্রতি প্রায় ৩০ ফুট মাটি খুড়ে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলো হাউজিং কোম্পানী। এতে মাটির তলদেশে সৃষ্টি হওয়া স্তর দিয়ে পানি নির্মাণাধীন এলাকায় ঢুকে পড়ে। একপর্যায়ে  পানির চাপ বেড়ে রাস্তা দেবে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পাশের দুটি দোকান ভেঙে গেছে। এখন ফাটলসহ আশপাশের ভবনগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে। আগুন ধরে যাওয়ায় গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ সড়কের প্রায় ১ হাজার পরিবারের রান্নাবান্না অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি বন্ধ হয়ে লক্ষ্মীপুর মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীসহ এ রুটে চলাচলকারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিক শাহিন কাদির রিপন বলেন, অনিয়ন্ত্রিত পাইলিংয়ের কারণেই মাটি সরে গিয়ে আমার দুটি দোকান ভেঙে গেছে। এতে আমার অন্তত ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

স্থানীয় ভবন মালিক শামছুল আলম বলেন, নিয়ম বহির্ভূত পাইলিংয়ের কারণেই সড়কে দেবে গেছে। পাশে দুটি দোকান ভেঙে গেছে। আমার ভবনটি এখন ঝুঁকিতে রয়েছে।

বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের লক্ষ্মীপুর কার্যালয় ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) এস এম জাহিদুল ইসলাম বলেন, লাইনে আগুন ধরে যাওয়ার কারণে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আগামি রোববার কুমিল্লা থেকে লোকজন এসে কাজ করবে। কাজ শেষে গ্যাস সংযোগ চালু হবে।

লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রকৌশলী জুলফিকার জুয়েল বলেন, ওয়ে হাউজিংকে ৭তলা ভবনের অনুমতি দিয়েছি। তারা ১০তলা ভবনের অনুমতি নিয়েছে কি না তা আমাদের জানা নেই। ফাইলিং নিয়ম অনুযায়ীই চলছিল। কিন্তু পাশেই পুকুর থাকায় মাটির নিচ দিয়ে পানির স্তর পেয়ে যায়। যার কারণে সড়কটি দেবে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে সড়ক আর ড্রেনের প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আপাতত তাদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। ক্ষতিপূরণ ও সড়ক সংস্কার শেষ হলেই কাজের অনুমতি দেওয়া হবে। আপাতত সড়কটি বন্ধ রাখা হয়েছে। 

ওয়ে হাউজিংয়ের এজিএম হাসান আহমেদ বলেন, আমরা নিয়ম অনুযায়ীই কাজ করছি।অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটনাটি ঘটে গেছে। আমরা ভবনটি ১০তলা করবো, তা প্রস্তাবিত। পৌরসভার অনুমোদন অনুযায়ী আপাতত ৭ তলা ভবনই হবে। সড়ক ও দোকান মালিকদের ক্ষতিপূরণ আমরা দিয়ে দেবো। সড়কের যেন বেশি ক্ষতি না হয়, সেজন্য আমরা ইতিমধ্যে মাটি ফেলে ব্যবস্থা নিয়েছি।

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাজীব কুমার সরকার বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরএস