নেত্রকোণায় ১ বছরে ২৩২টি অস্বাভাবিক মৃত্যু

গোলাম কিবরিয়া সোহেল, নেত্রকোণা প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৫, ০৫:০৪ পিএম

২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত গত ১ বছরে নেত্রকোণা জেলায় ২৩২টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেশিরভাগ অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সড়ক দুর্ঘটনায়।

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে চরম উদ্বেগ উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়াও অস্বাভাবিক মৃত্যুর মধ্যে রয়েছে হত্যা, গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা, বিষপানে আত্মহত্যা, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু ও পানিতে ডুবে মৃত্যু।

সচেতন বিশ্লেষকদের মতে, অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসেবের চেয়েও অনেক বেশি। কারণ অনেক সময় নিভৃতপল্লী এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনা, পানিতে ডুবে মৃত্যু, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কেউ মারা গেলে পুলিশি হয়রানি কিংবা ময়না তদন্তে কাঁটা ছেড়ার ভয়ে প্রশাসনকে না জানিয়ে অথবা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি সাপেক্ষে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করায় সরকারি হিসেবে নথিভুক্ত হয় না।

নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল সূত্র মতে, নেত্রকোণা জেলায় ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে ১৪টি, ফেব্রুয়ারি মাসে ১৭টি, মার্চ মাসে ২৯টি, এপ্রিল মাসে ২২টি, মে মাসে ২২টি, জুন মাসে ১৪টি, জুলাই মাসে ১৮টি, আগস্ট মাসে ১২টি, সেপ্টেম্বর মাসে ২১টি, অক্টোবর মাসে ২৪টি, নভেম্বর মাসে ২৩টি ও ডিসেম্বর মাসে ১৬টিসহ মোট ২৩২টি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে সোচ্চার জিয়া পরিষদ, নেত্রকোণার সভাপতি সানাউল হক মাসুম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে হলে সবার আগে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ, জেলা পরিবহণ মালিক সমিতি ও জেলা মোটরযান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের উদ্যোগে সব ধরনের যানবাহন চালকদেরকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ গাড়ি চালক তৈরি করার পাশাপাশি রাস্তায় কীভাবে গাড়ি চালাতে হয়, সে সব নিয়ম কানুন সম্পর্কে তাদেরকে সচেতন করতে হবে। অপ্রাপ্ত বয়স্ক, অদক্ষ এবং মাদকাসক্ত অবস্থায় কেউ যেন গাড়ি না চালায় এবং ট্রাফিক আইন যাতে সবাই মেনে চলে তার জন্য ট্রাফিক বিভাগকে আরো সততা ও আন্তরিকতার সহিত কাজ করতে হবে।

নেত্রকোণা বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক জি এম নাদির হোসেন বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ কল্পে আমরা বাস, ট্রাক, পিক-আপ ভ্যান ও অন্যান্য যানবাহন চালকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাসহ চালক হেলপার ও পথচারীদেরকে স্ব স্ব স্থান থেকে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছি।

পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ আমার সংবাদকে জানান, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ কল্পে নিরাপদ সড়ক আইন বাস্তবায়নে আমরা পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়াও পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও ট্রাফিক আইন মেনে চলতে চালক, হেলপার ও পথচারীদের মাঝে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। পুলিশ বিভাগ সড়ক দুর্ঘটনার পরপরই মামলা নিচ্ছে এবং অভিযুক্ত চালকদেরকে গ্রেপ্তার করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে।

ইএইচ