মায়ের বিরুদ্ধে ৫ দিনের নবজাতককে নদীতে ফেলে দেয়ার অভিযোগ

আরিফুর রহমান, নলছিটি (বরিশাল) প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২৫, ০৮:২১ পিএম

৫ দিনের এক নবজাতককে দপদপিয়া সেতুর ওপর থেকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। বুধবার দুপুরে এ ঘটনার পর থেকে এখনো নবজাতকটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি প্রথমে গোপন থাকলেও পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লোকমুখে জানাজানি হলে নগরী জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

এদিকে শারীরিক অসুস্থতা ও বিষণ্নতার কারণ দেখিয়ে মা ঐশি আক্তার বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তার স্বজনরা। যদিও ভর্তি রেজিস্ট্রারে কৌশল করে তার নাম রাবেয়া লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানেই আছেন তিনি। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম বৃহস্পতিবার রাত ৭টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছে ওই নারী ও তার স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।

নবজাতকের মা ঐশি আক্তারের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামে। তিনি একই উপজেলার হয়বৎপুর তৌকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ঐশি আক্তারের স্বামীর নাম সোহেল আহমেদ। তিনি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।

নবজাতকের বাবা সোহেল আহমেদ জানান, গত ১০ জানুয়ারি ভোরে শেবাচিম হাসপাতালে আমার স্ত্রী একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। এর দুইদিন পর স্ত্রী-সন্তানকে নগরীর বাংলাবাজার এলাকায় স্ত্রীর বড় বোনের বাসায় রেখে আসি। সেখান থেকে বুধবার দুপুরে সন্তানকে নিয়ে বের হন আমার স্ত্রী। এরপর সে অটোরিকশাযোগে দপদপিয়া সেতুতে গিয়ে সন্তানকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেন। এ ঘটনার পর থেকে আমার সন্তানের হদিস মিলছে না। এ ঘটনায় আমি আমার স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।

নবজাতকের মামা মো. মাসুদ জানান, তার বোন শারীরিক অসুস্থতা ও বিষণ্নতায় ভুগেছেন। এজন্য তাকে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে নবজাতক শিশুটি কোথায় আছে-এ প্রশ্নের জবাবে তার বোন কিছুই বলতে পারছে না।

হাসপাতালে দ্বিতীয়বার ভর্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন নাম ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, তার বোনের নাম রাবেয়া আক্তার ঐশি। তাই রাবেয়া লেখা হয়েছে।

শেবাচিম হাসপাতালের কর্মরত নার্সরা জানান, গত শুক্রবার এই হাসপাতালেই শিশুটি ভূমিষ্ঠ হয়। এরপর সোমবার স্বজনরা শিশুসহ তার মাকে বাসায় নিয়ে যায়। বুধবার বিকেলে ওই শিশুর মাকে ফের হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু শিশুটি তার সঙ্গে দেখা যায়নি। পরে লোকমুখে জানতে পেরেছি, শিশুটিকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন তার মা। খবর পেয়ে পুলিশও হাসপাতালে এসে খোঁজখবর নিয়েছেন।

নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম  বলেন,আমাদের কাছে এখনো কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমাদের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। ওই নবজাতকের মা অসুস্থ থাকায় তার কাছে থেকে পরিস্কারভাবে কিছুই জানা যাচ্ছে না।

আরএস