বেনজির ক্যাশিয়ারের হত্যার হুমকি, প্রতিকার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

মো. আবদুল হালিম, কক্সবাজার প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৫, ০১:০৭ পিএম

জেল থেকে জামিনে মুক্তি  পাওয়ার পর আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের ক্যাশিয়ার খ্যাত বিতর্কিত ব্যবসায়ী ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন।
তার বিরুদ্ধে রংধনু গ্রুপের হেড অব মিডিয়া মো. সাইফুল ইসলামকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে কক্সবাজারের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে সাইফুল ইসলাম এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “জসিম উদ্দিন, তার ভাই মাসুদ, শ্যালক জুয়েল, চাচা জহির এবং তাদের সহযোগীরা আমাকে শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার পরিকল্পনা করছেন। রংধনু গ্রুপে কাজ করায় তারা আমার প্রতি ইর্শার্ণীত হয়ে এসব করছে

সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, “জসিম উদ্দিন ও তার সহযোগীরা মাফিয়া স্টাইলে আমাকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমি রংধনু গ্রুপের প্রতিনিধিত্ব করার কারণেই তাদের টার্গেটে পরিণত হয়েছি। তার অপকর্ম নিয়ে কথা বলার পর থেকে আমার ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে।”

তিনি জানান, জসিম উদ্দিন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। বিভিন্ন সময় বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করে নিজের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলো ধামাচাপা দিয়েছেন।

সাইফুল ইসলাম প্রশাসনের কাছে তার এবং তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং জসিম উদ্দিন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।”

দেশের মাফিয়া চক্রের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে সুশাসন ও সামাজিক স্থিতিশীলতা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে বলে তিনি মনে করেন।

হুমকির বিষয়ে তিনি কক্সবাজার সদর থানায় জিডি করার পাশাপাশি কক্সবাজার পুলিশ সুপারের সাথেও দেখা করে নিরাপত্তার আশ্বাস পেয়েছেন বলে জানান সাইফুল।

জসিম উদ্দিনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড

জসিম উদ্দিন অতীতে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অপকর্মের মাধ্যমে আলোচনায় ছিলেন। তার বিরুদ্ধে স্বর্ণ চোরাচালান, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, আর্থিক জালিয়াতি এবং কর্মচারীদের নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে।হত্যার হুমকি বিষয়ে জানতে জসিম উদ্দিনের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। হোটেল রামাদায় গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

হাজার কোটি টাকার সম্পদ:

একসময়ে খাবারের দোকানে কাজ করা জসিম উদ্দিনের নামে-বেনামে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও দেশের বাইরের বিভিন্ন জায়গায় হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।কক্সবাজারের কলাতলীতে তার মালিকানাধীন বিলাসবহুল হোটেল রামাদার ২৫০ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে বলে জানা গেছে,। এ ছাড়াও কলাতলীর বে মেরিনা নামে একটি হোটেলে ৭৯টি ফ্ল্যাট এবং আরও ১৩টি ফ্ল্যাটের মালিকানা, যার আনুমানিক মূল্য ১০০ কোটি টাকা।চট্টগ্রামের লালদীঘি, চান্দগাঁও, খুলশী ও বাকলিয়ায় প্রায় ৫০০ কোটি টাকার জমি ও ভবনের মালিক।

দুবাই ও সৌদি আরবে একাধিক হোটেল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, যার আনুমানিক বিনিয়োগ ৫০০ কোটি টাকার বেশি।

ব্যাংক ঋণ খেলাপি: পদ্মা ব্যাংক থেকে নেওয়া ১১৫ কোটি টাকার ঋণ পরিশোধ করেন নি। ২. জমি দখল: চট্টগ্রামে একাধিক জমি দখল করে নিজের মালিকানায় নিয়েছেন। ৩. আন্তর্জাতিক জালিয়াতি: দুবাই ও সৌদি আরবে তার নামে ৪৬০ কোটি টাকার জালিয়াতি মামলা রয়েছে। ৪. কর্মচারীদের নির্যাতন: বিদেশে তার অধীনস্থ কর্মচারীরা শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন।

জসিম উদ্দিনের এসব কর্মকাণ্ড সম্পর্কে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে প্রত্যাশা করেছেন সাইফুল ইসলাম।

বিআরইউ