শার্শায় কুখ্যাত সন্ত্রাসী হামিদ বাহিনীর ত্রাসের রাজত্ব

এম এ রহমান, যশোর প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৯, ২০২৫, ০৭:২০ পিএম

যশোরের শার্শা উপজেলার গোগা ইউনিয়নের জনপদে চলছে ত্রাসের রাজত্ব। জবর দখল, চাঁদা আদায় ও ইটভাটা দখল করে নিয়েছে যশোর আদালতে ৫টি মাদক মামলার আসামি ও মাদক সিন্ডিকেট বাহিনীর প্রধান কুখ্যাত সন্ত্রাসী হামিদ সর্দার।

তার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে বিচার কার্যবসিয়ে নিরীহ মানুষদের কাছ থেকে আদায় করছে মোটা অঙ্কের টাকা। কেউ টাকা দিতে না চাইলে সেই পরিবারের উপর চালানো হচ্ছে নির্যাতন। সেই সব পরিবারের সদস্যদের বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে বাজার ঘাটে যাওয়া। বিঘ্ন ঘটছে জনজীবনে।

শার্শার গোগা ইউনিয়নের অগ্রভুলাট গ্রামের সিরালী মোড়লের ছেলে বাদশা মিয়া জানান, আমার মেয়ে বিয়ে দিয়েছিলাম কিন্তু পারিবারিক গোলযোগে তালাক হয়। সে ব্যাপারে হামিদ বাহিনীর প্রধান বিএনপির নেতা হামিদ সর্দার আমার কাছ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা চাঁদা নিয়েছে এবং একটি স্লিপ দিয়ে বলে গেছে আরও দশ লাখ টাকা না দিলে তোর পরিবারের কাউকে গ্রাম থেকে বেরুতে দেবো না। সেই থেকে জীবনের ভয়ে আমরা এখন ঘরবন্দি হয়ে রয়েছি। আমার ছেলে গোগা বাজারে গেলে তাকে ভয় ভীতি দেখালে সে আর ভয়ে বাজারে যায় না। চাঁদাবাজ হামিদ সর্দার গোগা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর থেকে দলীয় ক্ষমতা পেয়ে সে আরও বেপরোয়া হয়ে মানুষের উপর অত্যাচার করছে।  

গোগা বাজারের পূর্বপাশে বাড়ি গোলাম রসুলের ছেলে ফারুক হোসেন জানান, হামিদ বাহিনীর ভয়ে আমি আজ গ্রাম ছাড়া হয়েছি। এখন আত্মগোপন করে আছি ঢাকাতে। হামিদ বাহিনীর প্রধান হামিদসহ তার ত্রাস বাহিনীর সদস্যরা আমার কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদাদাবি করলে তা দিতে না পারায় তারা আমার ইটভাটা এ আরবি ব্রিকস্ (গাগা কলেজ রোডে) দখল করে নিয়েছে। আমার পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাদের ভয়ে আইনের আশ্রয় ও নিতে পারছি না।

কালিয়ানী গ্রামের মোক্তার হোসেনের ছেলে আয়ুব হোসেন জানান, সন্ত্রাসী হামিদ সর্দার আমাদের পরিবারের কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলে তার চাঁদার টাকা না দিতে পারায় তার নেতৃত্বে তার বাহিনীর সদস্য জুলফিকার, ফারুক, আরিফসহ একটি সন্ত্রাসীদল আমাদের পরিবারের উপর হামলা চালায়। মারপিট করে পরিবারের সকল সদস্যকে। এ ব্যাপারে শার্শা থানায় অভিযোগ দিতে গেলে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম আমাদের অভিযোগ না নিয়ে মাদক সিন্ডিকেট প্রধান ত্রাস হামিদ সর্দারের পক্ষ নিয়ে আমাদের পরিবারের ৩ জন সদস্যকে আটক করেন।

এ ব্যাপারে ত্রাস হামিদ সর্দার ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। দ্রুত তাকে দল থেকে বহিষ্কারের জোর দাবি জানিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীরা।

এ ব্যাপারে হামিদ সর্দারের সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, হামিদ সর্দারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। কেউ অভিযোগ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভুক্তভোগী আয়ুব হোসেনের অভিযোগ না নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ওসি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবু জানান, যেহেতু হামিদ সর্দারের দখল-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে পুলিশ তদন্ত করছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ইএইচ