দুই উপজেলায় দুর্ভোগ

আইনি জটিলতায় টেকারঘাট সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ

রাজয় রাব্বি, অভয়নগর (যশোর) প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২৫, ০৮:০০ পিএম

যশোরের অভয়নগরে আইনি জটিলতায় টেকারঘাট সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে পাশাপাশি দুই উপজেলার হাজার হাজার মানুষ।

কাঠের তৈরি বিকল্প সেতু দিয়ে চলাচলে ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। নির্ধারিত সময়ে নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) দায়ী করলেন রিটকারী ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল কবীর জাহিদ।

উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে পুনরায় কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন যশোর জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মাহবুবুর রহমান।

জানা গেছে, অভয়নগর ও মণিরামপুর উপজেলার সীমান্তে টেকা নামে একটি নদী রয়েছে। নদীর এক পাশে অভয়নগর উপজেলার পায়রা ইউনিয়ন। অপরপাশে মণিরামপুর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়ন।

দুই উপজেলার  যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে ১৯৮০ দশকে অভয়নগরের টেকারঘাট এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ করেছিলেন তৎকালীন সরকার। দীর্ঘদিনের পুরাতন সেই সেতু ভেঙে ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর একই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।

খুলনা বিভাগীয় অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৮ কোটি ৫৫ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ব্যয়ে মোজাহার এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে। ২০২৩ সালের ৭ মার্চ নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়া এবং সেতুর উচ্চতা সমস্যা নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন যশোরের বাসিন্দা ইকবাল কবীর জাহিদ।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, টেকারঘাট সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডসহ কোনো মালামাল সেখানে নেই। অসমাপ্ত সেতুর পাশে একটি কাঠের তৈরি বিকল্প সেতু দিয়ে ছোট যানবাহন ও মানুষ চলাচল করছে।

অভয়নগরের পায়রা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ফিরোজ আলম বলেন, আইনি জটিলতায় সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে দুই উপজেলার মানুষ। কাঠের তৈরি বিকল্প সেতু দিয়ে চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। যে কারণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না হলে দুই উপজেলার মানুষ রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এক প্রতিনিধি বলেন, আদালতের নির্দেশ মেনে কাজ চলছিল। ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর নির্মাণ সামগ্রীসহ অন্যান্য মালামাল লুট হয়ে যায়। আমাদের লোকজনকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। কথাগুলো বলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান তিনি।

রিটকারী ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, ছয় মাসের মধ্যে নিয়ম অনুযায়ী কাজ শেষ করে রিপোর্ট করার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। আদালতের দেয়া সময় শেষ হয়ে গেছে। অথচ এলজিইডি কিছুই করেনি। যে কারণে দায় এড়াতে পারে না তারা। এখন এলজিইডি হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

যশোর জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহমেদ মাহবুবুর রহমান বলেন, উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞায় টেকারঘাট সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলে পুনরায় কাজ শুরু করা হবে।

ইএইচ