জনবলসহ নানা সংকটে সংকটাপন্ন প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। বরিশালের ৬ হাজার ২৪২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে ১৭শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৩৩ হাজার ৪১৯ সহকারী শিক্ষকেরও প্রায় ২২শ পদ শূন্য।
প্রায় ৪ হাজার শিক্ষক ঘাটতি নিয়ে বরিশাল অঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা অনেকটাই ধুকছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ‘সবাই শহরে থেকে চাকরি করতে চায়। আর এজন্য অনেক উপর মহল থেকে তদবির করা হয় যে কর্মকর্তাদের তেমন কিছু করার থাকে না। ফলে শহরের প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক সংকট না থাকলেও গ্রামের অবস্থা খুবই খারাপ। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬ জন সহকারী শিক্ষকের স্থলে আছেন মাত্র দুজন।
অপরদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রশাসনিক পর্যায়েও জনবল সংকট আছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ২১৫টি পদের বিপরীতে কাজ করছেন ১৬৪ জন।
উপজেলা পর্যায়ে ১০৭টি পদে কোন জনবল নেই। এমনকি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের ৫১৫টি পদের বিপরীতেও কর্মরত আছেন মাত্র ২৪৩ জন। জনবল সংকটসহ অবকাঠামোগত দুর্বলতায় বরিশাল অঞ্চলের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ইতোমধ্যে ভেঙে পড়েছে বলে দাবি অভিভাবকদের।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য যে শিক্ষক প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে সেখানেও জনবল সংকট প্রকট। ফলে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের বিষয়টিও ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে। ৬টি পিটিআইতে বিভিন্ন ধরনের ২০৪টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৯২ জন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বরিশাল অঞ্চলের অনেক কর্মককর্তা-কর্মচারী আগামী মাস ছয়েকের মধ্যে অবসরে যাবেন। এতে করে সংকট আরও বাড়বে।
বরিশাল অঞ্চলের পিটিআইগুলোর ইনস্ট্রাক্টরের ৯৫টি পদের ৪৫টি পদে কোন জনবল নেই।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ-পরিচালক বলেন, এ ঘাটতি পূরণ জটিল বিষয় হয়ে উঠেছে। কিছু কিছু পদে নতুন জনবল নিয়োগের বিষয়টি আটকে আছে আইনগত জটিলতায়। তবে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর এ বিষয়ে সার্বক্ষণিকভাবে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। তারমতে, গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেউ চাকরি করতে চায় না। গ্রামের নারী-পুরুষও তার নিজ এলাকা ছেড়ে শহরে চাকরি করতে অধিক আগ্রহী। অনেকেই তদবির করে শহরে এসেছেন। পল্লী এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনবল সংকটের এটা অন্যতম কারণ।
ইএইচ