ইসলামিক জ্ঞানচর্চার ভাণ্ডার নীলফামারী জেলা মডেল মসজিদ

আল-অমিন, নীলফামারী প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৫, ০৬:৫৬ পিএম

উদ্বোধনের মাত্র দুই বছরে নীলফামারী জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি ধর্মীয় জ্ঞানচর্চার ভাণ্ডার হিসেবে ভালোই পরিচিতি পেয়েছে জেলার ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে।

পাশাপাশি জেলা সদরসহ ৫ উপজেলায় রয়েছে আলাদা আলাদা মডেল মসজিদ। সেখানেও সমানতালে চলছে ইসলামিক জ্ঞানচর্চা। প্রতিনিয়ত ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা আসেন এখানে জ্ঞানচর্চার জন্য। ফলে আশপাশের বাসিন্দারা গর্ভভরে আপন করে নিচ্ছেন এসব মসজিদগুলো।

অপরদিকে একটি কুচক্রী মহল নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য মডেল মসজিদটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তাদের এমন অপপ্রচার ভিত্তিহীন বলে দাবি কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসীর।

শনিবার সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের মোড়লের ডাঙ্গায় অবস্থিত জেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিনের মতো যোহরের সালাত আদায় করতে আসছেন আশপাশের মুসল্লিরা।

তাদের সাথে কথা হলে জানান, এ মসজিদে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত আর জুম্মা’র সালাত আদায় করা হয়। আবার প্রতিনিয়ত বিভিন্ন জায়গা থেকে দর্শনার্থীরা মডেল মসজিদ দেখতেও আসেন এবং লাইব্রেরি থেকে ইসলামিক বই ক্রয় করে নিয়ে যায়।

এছাড়াও কুরআন হেফজ বিভাগ, শিশু শিক্ষা, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষাকেন্দ্র ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ জ্ঞান বিকাশের জন্য বিভিন্ন ইসলামিক কার্যক্রম পরিচালনা করেন কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় আবুল কালাম আজাদ ও এলি বলেন, ‘মসজিদটি এলাকাবাসীর পাশাপাশি জেলার সর্বস্তরের মানুষের কাছে খুবই প্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা প্রতিদিন এ মসজিদে সালাত আদায় করি। মুসল্লিদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মসজিদে জরুরি বাহির দরজাও আছে। তাই আমরা এই মসজিদকে নিরাপদ মনে করি এবং তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডেও অংশগ্রহণ করি। ইসলামিক কেন্দ্র হওয়ায় জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও গণপূর্ত বিভাগ খুবই গুরুত্বের সাথে মানসম্মত মালামাল দিয়ে এই মসজিদগুলো নির্মাণ করেছেন।’

আলম নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘আমাদের এলাকায় মডেল মসজিদ হওয়ায় আমরা আনন্দিত। কারণ আমরা এ মসজিদে এসে ইসলামিক জ্ঞানচর্চা করতে পারি। প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষের সাথে সাক্ষাৎ হয়। তাদের ইসলামিক আলোচনায় যুক্ত হয়ে আমরা জ্ঞান লাভ করি।’

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মোছাদ্দিকুল আলম বলেন, ‘আমি এখানে জয়েন করেছি কয়েক মাস হলো। মডেল মসজিদগুলো একটি ইসলামিক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় ঠিকাদার ও ইঞ্জিনিয়াররা গুরুত্বের সাথে কাজ সমাপ্ত করেছে। এছাড়াও জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে এলাকাবাসী সকলে কাজ চলাকালে এর দেখাশোনা করেছেন। তারাও কাজে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন। আমি যোগদানের পর নতুন করে কিছু কাজ করানোর জন্য গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তিনি বিষয়টি আমলে নিয়েছেন। তাই আমি এই মসজিদকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছি না।’

নীলফামারী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাকিউজ্জামান বলেন, মডেল মসজিদগুলো ইসলামিক প্রতিষ্ঠান। এই মসজিদগুলোকে গুণগতভাবে নির্মাণের লক্ষ্যে আমরা ইঞ্জিনিয়ারদের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত তদারকি করেছি। এখানে কোন প্রকার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়নি। যারা এ অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা নিজের স্বার্থ হাসিলের পাঁয়তারা করছে।

গণপূর্ত বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ৪৩ শতক জমির উপর ১৬ কোটি ৯২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগের অধীনে মডেল মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল মডেল মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এরপর ২০২৩ সালের ১৬ মার্চ তৃতীয় পর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ও হস্তান্তর করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী।

ইএইচ