পারিবারিক ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ, বিবাহ বিচ্ছেদ, খোরপোষ, গ্রাম্য মারামারি থেকে শুরু করে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত সব ধরনের দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা মীমাংসা করে প্রশংসা কুড়াচ্ছে যশোরের গ্রাম আদালতের বিচারকরা। আর এই কারণে ন্যায় বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ায় গ্রাম আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা দিন দিন বাড়ছে। ফলে প্রচলিত আদালতের প্রতি মানুষের নির্ভরতা কিছুটা কমতে শুরু করেছে। যার ফলে সাধারণ বিচার প্রার্থীদের সময়, শ্রম ও অর্থ যেমন শেভ হচ্ছে তেমনি দূর হচ্ছে ভোগান্তি। আর এসব কারণে যশোরে দিন দিন জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে গ্রাম আদালতের কার্যক্রমে। যশোর কালেক্টরেট সভাকক্ষে গ্রাম আদালত কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক সমন্বয় সভায় এমন চিত্রই ফুটে ওঠে।
সভায় তথ্য চিত্র তুলে ধরে গণমাধ্যমকর্মীদের অবহিত করা হয় গত ১১ মাসে যশোরের ৮ উপজেলার ৯৩টি গ্রাম আদালতে মোট ১৫শথ ৬৮টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ২২০ টি মামলা জেলা আদালত থেকে নিষ্পত্তির জন্য গ্রাম আদালতে পাঠানো হয়। বাকি মামলা গুলো স্থানীয় ভাবে দায়ের করা । এই সময়ের্য মধ্যে ১৪ শথ৯১টি মামলা নিষ্পত্তি করে বিচার প্রার্থীদের ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হয়েছে। এসব মামলায় সাজাপ্রাপ্তদের ১ কোটি ৯৬ লাখ ৫৬ হাজার টাকা অর্থদন্ডপূর্বক তা আদায় করে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিলিবণ্টন করা হয়েছে । গড়ে প্রতিটি মামলা ২৩ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।
যশোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত গ্রাম আদালতের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক রফিকুল হাসান। প্রধান অতিথি ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম।
এই সমন্বয় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন , অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার ও ৮ উপজেলার নির্বাহী অফিসারবৃন্দ। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন সুলতানা,মনিরামপুরের নিশাত তামান্না,সিনিয়র সাংবাদিক নূর ইসলামসহ আরো অনেকে।
সভায় গ্রাম আদালত প্রকল্পের অগ্রগতি উপস্থাপন করেন গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের ডিস্ট্রিক ম্যানেজার এ্যাড. মহিতোষ রায়। সভায় প্রধান অতিথি তার বক্তৃতায় বলেন, গ্রামে অনেক ছোট খাটো ঘটনা ঘটলেও এখনও কিছু মানুষ তার প্রতিকার চাইতে থানা বা জেলা আদালতে আসেন যাতে অনেক সময় ও অর্থ ব্যয় হয় এবং এতে করে তারা আরো সমস্যায় জড়িয়ে পড়েন। আদালত গুলোতে সৃষ্টি হয় মামলার জট। এ জাতীয় ছোটোখাটো সমস্যা স্বল্পসময়ে, অল্প খরচে গ্রাম আদালতেই নিষ্পত্তি করা যায়। বর্তমান সরকার গ্রাম আদালত কার্যকরী করতে অঙ্গীকারবদ্ধ ও সক্রিয়।
এই ক্ষেত্রে ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সক্রিয় ভাবে কাজ করতে হবে এবং আসুন আমরা সবাই মিলে গ্রাম আদালতকে কার্যকরী করে তুলি। “উচ্চতর আদালতের মামলার জট কমাতে গ্রাম আদালত কার্যকরী করণের কোন বিকল্প নাই। ইউপি সচিবদের আরো কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে এবং এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যানকে কার্যকরী সহায়তা দিতে হবে বলে জেলা প্রশাসকসহ উপস্থিত বক্তারা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।
বিআরইউ