ডাক্তার ও আউটসোর্সিং সংকটের কারণে চিকিৎসাসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এর ফলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন দূর দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীরা।
দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও দেখা পাচ্ছেন না কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসকের। এক রোগের চিকিৎসা নিতে এসে অন্য রোগের চিকিৎসককে দেখাতে বাধ্য হতে হচ্ছে রোগীদের। কাগজে কলমে ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে বেড রয়েছে মাত্র ৫০ টি। হাসপাতালটিতে দৈনিক গড়ে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ জন রোগী ভর্তি থাকেন। এছাড়াও আউটডোরে প্রতিদিন গড়ে চিকিৎসা নিতে আসেন আরও ৪০০ থেকে ৪১০ জন রোগী। রোগীর চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
সরজমিনে হাসপাতালটিতে গিয়ে দেখা গেছে, রোগীদের দীর্ঘ লাইন থাকলেও অনেকেই তাদের কাঙ্ক্ষিত ডাক্তারকে দেখাতে পারছেননা। যারা ডাক্তার দেখাতে পারছেন তারা খুশি। আর যারা পারছেন না তারা হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন বাড়ি।
নাচোল পৌরসভার মধ্যে বাজারের বৃদ্ধ বাবুল আক্তার জানান, প্রায় এক মাস ধরে প্রস্রাবের সমস্যার কারণে এখানে ভর্তি রয়েছি। এ হাসপাতালে চিকিৎসক খুবই কম রয়েছে। ভালোমতো চিকিৎসা পাচ্ছি না। যতজন ডা. থাকার প্রয়োজন, সবগুলো থাকলে আরও আগে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি যেতে পারতাম। সরকারের কাছে দাবি করছি, যেন ডাক্তারের সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়।
উপজেলার জোড় পুকুর গ্রামের মরিয়ম বেগম জানান, এই মেডিকেলে মাথা ও বুকের সমস্যার কারণে ৫দিন ধরে ভর্তি আছি। সঠিক ভাবে চিকিৎসা পাচ্ছি না। দিনরাতে মাত্র একবার ডা. আসে।
ডাক্তার খুব কম আছে। কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করছি ডাক্তারের এর সংখ্যা যেন বাড়িয়ে দেন।
উপজেলার কাজলা গ্রামের একজন বৃদ্ধা রোগীর সাথে থাকা রেসমা খাতুন জানান, আমার আম্মু ৬দিন থেকে জ্বর, ডান্ডা কাশি সহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ভর্তি রয়েছে। এখানে ঠিকমতো ডাক্তার থাকে না। সকালে একবার ডাক্তার রাউন্ড দেয়। আর সারাদিন কোন ডাক্তার আসেনা। রাতে ৯টার পর একবার একজন ডাক্তার আসেন। তাও আবার ডাকলে আসেন। না ডাকলে আর আসেননা। নার্সেরাই দেখাশোনা করেন।
এবিষয়ে নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও ডা. কামাল উদ্দিন জানান, মেডিকেলে চিকিৎসক থাকার কথা ১৩ জন এর মধ্যে রয়েছে মাত্র ৪ জন। শূন্য রয়েছে ৯জন। আউটসোর্সিং ১৯ জনের মধ্যে রয়েছে ১৩জন, শূন্য রয়েছে ৬জন। এছাড়া অন্যন্যো পদ সমূহের জনবল সঠিক পরিমাণ রয়েছে।
তবে ১বছর যাবত চিকিৎসক এবং ৩বছর যাবত আউটসোর্সিং জনবলগুলোর সংকট রয়েছেন। যার কারণে রোগীর চাপ সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাকে। এবিষয়ে প্রতিমাসেই, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন, রাজশাহী ডিরেক্টর ও ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অফিসে চাহিদা পাঠাতে আছি কিন্তু কোন ধরনের ফিডব্যাক আসেনি।
বিআরইউ