ইরি-বোরো চাষে ব্যস্ত ফুলছ‌ড়ি‌র কৃষকেরা

ফারুক হোসেন, ফুলছড়ি (গাইবান্ধা) প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫, ১২:৫৭ পিএম

গাইবান্ধার ফুলছড়িতে ইরি-বোরো চা‌ষে ব‌্যস্ত সময় পার কর‌ছে কৃষকেরা। শীতকে উপেক্ষা করে নতুন স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছেন চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বীজ তলায় ইরি-বোরোর চারাগুলো হয়ে উঠেছে সতেজ ও চিরসবুজ। এবার উপজেলায়  ৭ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে  চাষ হবে ইরি-বোরো। কাঙ্ক্ষিত ফলন উৎপাদনে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন ফুলছড়ি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস।

সরেজমিনে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শীতকে উপেক্ষা করে ঠান্ডা পানিতে নেমে ইরি বোরোর চারা তুলছে কৃষকরা। কেউ কেউ চারা রোপণ করতে জমিতে নেমেছেন কাক ডাকা ভোরে। কেউবা রোপণের জন্য প্রস্তুত করছেন চাষের জমি। গ্রামে পরিবার নিয়েও মাঠে বোরো চাষের কাজ করতে দেখা গেছে। ধান মাড়াই করে দেশের চাহিদার পাশাপাশি পরিবারের চাহিদা মেটাতে আসায় বুক বেঁধেছে কৃষক ।

চন্দিয়া গ্রামের কৃষক মোঃ‌ আজিজ মিয়া(৩৫) বলেন আমি বর্গা নিয়ে দুই বিঘা আর নিজের ২ বিঘা জমিতে ইরি-বোরো চাষ করছি। উচ্চ  ফলনশীল  হাইব্রিড জাতের চারা ধান লাগা‌নোর জন‌্য চারা গাছ অনেক ভাল হয়েছে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন তিনি। তবে শ্রমিকের মূল্য অনেক বেশি এবং শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছেনা বলেও জানান তিনি। সা‌রের মুল‌্য বে‌শি তাই  আবা‌দের খরচ অ‌নেক বে‌শি হয় ।

উত্তর বুড়াইল গ্রা‌মের কামলা( কৃষান) মোঃ মোস‌লেম মিয়া (৪০) বলেন, এত বে‌শি ঠান্ডা পে‌টের দায়ে অ‌নেক সকা‌লে কাজ কর‌তে এ‌সে‌ছি। আমরা চুক্তিতে (ঠিকা) নি‌য়ে কাজ করি। একবিঘা জমিতে চারা তু‌লে গাড়া (রোপণ ) করা মুল্য ২ হাজার টাকা।

ফুলছড়ি পল্লী বিদ্যুৎ কা‌লির বাজার সাব-‌জোনাল অ‌ফিসের কর্মকর্তা না‌জির হোসাইন( অতিরিক্ত দায়িত্ব ) জানান, জ‌মি‌তে সে‌চেযেন লোডশেডিং না হয় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করে‌ছি । বর্তমানে কোন লোডশে‌ডিং নাই । জ‌মি‌তে সেচ দি‌তে আমরা রা‌তে পাম্প চালানোর পরামর্শে দিচ্ছি।

এছাড়াও ডি‌জেল চা‌লিত স‌্যলো ম‌্যা‌সিন দি‌য়েও সেচ দি‌তে দেখা যায় । প্রতি‌লিটার কে‌রো‌সি‌নের মুল‌্য ১০৯ টাকা সে‌চের জন‌্য সি‌কিউরি‌টি (ম‌্যসিন খরচ ) ১৫ শত টাকা,অন‌্যদি‌কে বিদ‌্যুৎ চা‌লিত পা‌ম্পে ২৬ শত থে‌কে ২৮ শত টাকা বিঘা প্রতি সে‌চের মুল‌্য নেয় পাম্প মা‌লিকগন ।

ফুলছড়ি উপজেলা কৃ‌ষি কর্মকর্তা মিন্টু মিয়া আমার সংবাদকে জানান, এবার ৭ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্য মাত্র ধরা হয়েছে ৩২ হাজার ৮২৫ মেট্রিকটন ধান।  আশা করছি লক্ষ্য মাত্রা পূরণ হ‌বে। এসময় তিনি আরো জানান, সঠিক সময়ে কৃষকদের সার ও ধানের বীজ প্রণোদনাসহ কৃষি ট্রেনিং প্রদান করা হয়েছে। চাষকালীন সময়েও কৃষকদের চাহিদা অনুযায়ী পরামর্শ দেওয়া হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
বিআরইউ