জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে একই পরিবারের তিন সদস্যকে কুপিয়ে আতাউর রহমান বিপুল মিয়াকে হত্যার ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি আসাদুজ্জামান আপেলকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।
রোববার দুপুরে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে জামালপুর জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মাধবপুর উপজেলার হরিপুর এলাকা থেকে প্রধান আসামি আসাদুজ্জামান আপেলকে (৪০) গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
পুলিশ সুপার ব্রিফিংয়ে বলেন, "সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দি এলাকার নিহত বিপুল মিয়ার পিতা আনোয়ার হোসেন কালু মিয়া ও তার চাচাতো ভাই তোতা মিয়ার সঙ্গে বসতবাড়ির জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে গত ১৭ জানুয়ারি সকালে আনোয়ার হোসেন কালু মিয়ার বসতবাড়ির আঙিনায় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে হুমকি দেয় তোতা মিয়ার ছেলে আসাদুজ্জামান আপেলসহ তার লোকজন। এ নিয়ে বিপুল, তার স্ত্রী আসমা বেগম ও পুত্রবধূ মুক্তা বেগমের সঙ্গে তাদের কথা-কাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে আতাউর রহমান বিপুল, মুক্তা বেগম ও আসমা বেগমের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় আসাদুজ্জামান আপেলসহ তার সহযোগীরা। এ সময় বিপুলের ডান হাত ও ডান পা কুপিয়ে শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় এবং তার স্ত্রী মুক্তার ডান হাতের তিনটি আঙুল ও বাম পায়ের রগ কেটে ফেলা হয়।
বিপুলের মা আছমা বেগম তাদের বাঁচাতে গেলে তাকেও মারধর করা হয় এবং একটি হাত ভেঙে দেওয়া হয়। হামলাকারীরা সবাইকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে তাদের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। কর্তব্যরত চিকিৎসক বিপুল মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। আছমা বেগম ও মুক্তা বেগম বর্তমানে ঢাকা পিজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার পরদিন (১৭ জানুয়ারি) নিহতের বড় ভাই আল-আমিন বাদী হয়ে আসাদুজ্জামান আপেলকে প্রধান আসামি করে সরিষাবাড়ী থানায় ১০ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও ডিবি পুলিশ বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি আপেলসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। প্রধান আসামিকে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার হরিপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
ইএইচ