সরকার পতনের পর দক্ষিণাঞ্চলে বেদখল হচ্ছে সরকারি জমি

আরিফ হোসেন, বরিশাল ব্যুরো প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৫, ০৬:০২ পিএম

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাবেক সরকারের পতনের পর দক্ষিণাঞ্চলে চলছে সরকারি জমি দখলের মহোৎসব। এমনকি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নির্মিত কলোনিও বছর পর বছর ধরে অন্যদের দখলে রয়েছে। এই সুযোগে পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমি দখলের হিড়িক পড়েছে গোটা জেলাজুড়ে। নির্মাণ করা হচ্ছে অস্থায়ী দোকানঘর। যদিও দখলদাররা জানান, সরকার চাইলে জমি ছেড়ে দেবেন তারা। আর দ্রুত উচ্ছেদ অভিযানের কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ‘

ধান-নদী-খাল এই তিনে বরিশাল’ আর সেই জেলার বিভিন্ন উপজেলায় থাকা সরকারি ভবন ও জমি যেন দিন দখলে যাচ্ছে দখলদারদের হাতে যাচ্ছে। প্রকাশ্যে দখলদাররা ভবন ও রাস্তাসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড  (পাউবো) ও সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমি দখল করে বসবাস বাণিজ্যের   জন্য করেছে স্থাপনা। আবার কেউ দখল করে দিচ্ছে ভাড়া। তবে এবার সরকার পতনের পর জেলার গৌরনদী, বাবুগঞ্জ, বরিশাল, উজিরপুর, বাকেরগঞ্জ, আগৈলঝাড়ায় যেন চলছে পানি উন্নয়ন   বোর্ডের জমি দখলের মহোৎসব। অভিযোগ রয়েছে দখলদাররা সেখান থেকে ভাড়া বাবদ প্রতিমাসে আয় করে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। 

তবে প্রকাশ্যে এ ভাবে দখল চললেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এতে সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। এই সুযোগে বরিশালের বাকেরগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে বানিয়েছে বাজার এবং মার্কেট। অন্যদিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশ সহ জেলার বিভিন্ন স্থানের পড়ে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সড়ক ও জনপদ বিভাগের জমি দখল করে প্রতিদিনই নির্মাণ করা হচ্ছে অস্থায়ী দোকানপাট ও বাজার। 

দখলদাররা বলছেন দীর্ঘদিন ধরে জায়গা খালি পড়ে থাকায় আমরা সরকারি জমিতে দোকান দিয়েছি। সরকারের যখন লাগবে তখন আমরা সরে যাবো। বরিশালের প্রবীণ সাংবাদিক ও বিপ্লবী বাংলাদেশের সম্পাদক নুরুল আলম ফরিদ বলেন, দখলদারদের বিষয়ে সরকারকে গুরুত্ব দিয়ে নজর দিতে হবে। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেয়া হয়েছে। অথচ বিষয়গুলো এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল বলছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে জেলায় তাদের ৩ হাজার ১৭৫ একর সম্পত্তি রয়েছে তাদের। যার মধ্যে কিছু চলমান এবং পরিত্যক্ত ভবন রয়েছে। তবে আমাদের অধিকাংশ জমিই বেদখলে রয়েছে। তিনি আরো বলেন, জেলার ৬৫৬ জন দখলদারদের তালিকা করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই দ্রুত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। 

সওজ বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মাসুদ খান বলেন, আমাদের জমিতে আমরা কোনো অবৈধ স্থাপনা রাখবো না। আমার জানা আছে, কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত। খুব দ্রুতই তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারি সম্পত্তি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক এমনই দাবি সচেতন মহলের।

আরএস