মাগুরায় টেন্ডার বিক্রির আগেই কাজ শেষ

মাগুরা প্রতিনিধি: প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫, ০৫:০০ পিএম

মাগুরা গণপূর্ত বিভাগ টেন্ডারের (দরপত্র) শিডিউল বিক্রির আগেই প্রায় কোটি টাকার কাজ পছন্দের ঠিকাদারের কাছে বণ্টন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এক বছর আগেই এ কাজ শেষ করেছেন।

এপিপির কাজ এলটিএম বাদে দরপত্র আহ্বান করা নিষেধ থাকলেও ওটিএম এর মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ইজিপি (রাজস্ব)আওতায় ১০টি প্রকল্পে মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজের স্বাক্ষরে ১০-ফেব্রুয়ারী(ওটিএম) দরপত্র আহ্বান করা হয়।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,দরপত্র ১০টির মধ্যে ৪টি ওটিএম,৬টি এলটিএম দরপত্র আহ্বান করা হয়।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী,২৪-ফেব্রুয়ারী দুপুর ১২:০০ ঘটিকায় টেন্ডার খোলা হয়েছে। প্রত্যেক প্রকল্পের অনুকূলে যে ঠিকাদার চুক্তিমূল্য কম দেবেন তিনি ওই কাজের ঠিকাদার নিয়োগ পাবেন।

তবে সর্বমোট কতটি টেন্ডার জমা পড়েছে এ বিষয়ে কোন তথ্য দিতে রাজি নন মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজ, নির্বাহী প্রকৌশলী মাগুরা গণপূর্ত বিভাগ, মাগুরা।

তবে সরেজমিনে দেখা যায়, টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১৬, কাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: 

মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বাসভবনের RCC রাস্তা নির্মাণ এবং হাঁটার পথ সংস্কার।প্রাক্কলিত মূল্য টাকা-৮.০০ থেকে ৯.০০ লক্ষ।টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১৫,মাগুরা ডিসি অফিসের বাগানের আনুষঙ্গিক মেরামত ,অফিসের চারপাশে ধাতব হ্যালাইড স্থাপন।

প্রধান ফটকে পি-৬ মনিটরের মেরামত।যার প্রাক্কলিত মূল্য টাকা-৪.০০ থেকে ৫.০০ লক্ষ। টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১৩,মাগুরা সার্কিট হাউসে চারটি সাধারণ কক্ষের সংস্কার ও আধুনিকীকরণ শৌচাগারের টাইলস প্রতিস্থাপন,দরজা প্রতিস্থাপন,যার প্রাক্কলিত মূল্য -৯.০০ থেকে ১৯.০০ লক্ষ টাকা।টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১১,নির্বাহী প্রকৌশলী গণপূর্ত মাগুরার বাসভবনে নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে সীমানা প্রাচীরের উপরে সম্প্রসারণ।প্রাক্কলিত মূল্য -১২.০০ থেকে ১৩.০০ লক্ষ টাকা।ওই নোটিশের কাজসহ নাম না জানা আরো অনেক কাজ এক বছর আগেই শেষ হয়েছে।

মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদার ফরিদ খান বলেন, আমি এখানকার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার অথচ টেন্ডার ক্রয় করে কোন কাজ পাইনা। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যোগসাজশে কাজ ভাগবাটোয়ারা করে নেয় তাঁরা ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার বলেন, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তারা জানতে পারেন গণপূর্ত বিভাগের এমন টেন্ডার স্বৈরাচার শাসনামলে অনেক বার হয়েছে।অথচ ভবনটির নোটিশ বোর্ডে এ বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়নি। শিডিউল কিনতে গিয়ে জানতে পারি কাজগুলো আগে থেকেই কর্মকর্তার সুবিধামতো ঠিকাদারদের বরাদ্দ দিয়েছে। এটা এক প্রকার অনিয়ম। এতে কাজের গুণগত মান খারাপ হবে।

এ বিষয় আজ মঙ্গলবার দুপুরে মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে। এতে নাগরিকদের দীর্ঘসময় ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ কারণে নাগরিকের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে টেন্ডারের আগেই কাজ শুরু করেছেন।

টেন্ডার সংক্রান্ত কাজের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে মোহাম্মদ ফজলুল হক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী,যশোর গণপূর্ত সার্কেল,বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি এবং তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

টেন্ডার সংক্রান্ত কাজের বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে মুহাম্মদ শামিম আক্তার,  প্রধান প্রকৌশলী,গণপূর্ত অধিদপ্তর,পূর্ত ভবন,সেগুনবাগিচা,ঢাকা।মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। 

বিআরইউ