পুলিশের গুলিতে পা হারানো জাহাঙ্গীর এখন অসহায়

ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৫, ০২:৩৬ পিএম

দরিদ্র পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর জীবিকার সন্ধানে ঢাকায় গিয়েছিলেন। ঠিক সে সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলছিল।

গত ৪ আগস্ট ঢাকার জিরানি এলাকায় ওই আন্দোলনের মিছিলে অংশ নিলে পুলিশের ছোড়া শটগানের গুলিতে তার হাঁটুর ওপরে গুলি লাগে এবং পায়ের একাংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

অর্থকষ্টে এখন তার চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে।

জাহাঙ্গীর পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা হাফিজুর রহমান একজন দিনমজুর। ছেলের চিকিৎসার খরচ জোগাতে হাফিজুর রহমান তার শেষ সম্বল গরু ও ছাগল বিক্রি করেন, তবুও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সম্ভব হয়নি।

জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সেদিন আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলাম। হঠাৎ পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে ও শটগানের গুলি ছোড়ে। গুলি থেকে বাঁচতে দৌড়ানোর সময় বিকট শব্দে মাটিতে পড়ে যাই। জ্ঞান ফিরলে দেখি হাসপাতালে, আর আমার একটি পা নেই।’

জাহাঙ্গীরের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে আন্দোলনে গুলি খেয়ে পঙ্গু হয়ে গেল, কিন্তু কেউ তার খোঁজ নিল না। নতুন সরকার এসেছে, সবাই পরিবর্তনের কথা বলছে, অথচ আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর হাসপাতালে গিয়ে দেখি ছেলের শরীর শটগানের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। চিকিৎসার খরচ চালাতে পারছি না, দুই মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। আমরা সরকারের কাছে সাহায্য চাই।’

স্থানীয়রা জানান, ছাত্র আন্দোলনে জাহাঙ্গীরের ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য, কিন্তু এখন তিনি সমাজ ও পরিবারের বোঝা হয়ে গেছেন। প্রতিবেশী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘এই তরুণেরা যে সাহস দেখিয়েছে, তা ভোলার নয়। আমরা চাই সরকার তার চিকিৎসা ও ভাতার ব্যবস্থা করুক।’

ইএইচ