কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে তামাক চাষে ঝুঁকেছেন কৃষকরা, যার ফলে খাদ্যশস্যের উৎপাদন কমে আসছে এবং খাদ্য ঘাটতির শঙ্কা তৈরি হচ্ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, তামাক চাষের কারণে ক্যান্সারসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে, তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব মাঠই এখন তামাকের চাষে পরিণত হয়েছে। তামাক কোম্পানিগুলো বীজ, সারসহ সব ধরনের সুবিধা দিয়ে তামাক চাষের দিকে কৃষকদের আকৃষ্ট করছে, এবং এর ফলে দৌলতপুরসহ কুষ্টিয়ায় ব্যাপকভাবে তামাক চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। অধিক মুনাফার আশায় অনেক কৃষক খাদ্যশস্য উৎপাদন বন্ধ করে তামাক চাষে ঝুঁকেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ বছর জেলায় ১১ হাজার ৩৮৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে, এর মধ্যে দৌলতপুর উপজেলাতেই চাষ হয়েছে ৩ হাজার ৮শ হেক্টর, যা গত বছরের তুলনায় ২শ হেক্টর বেশি। এর ফলে খাদ্যশস্যসহ অন্যান্য ফসলের আবাদ কমে যাচ্ছে এবং খাদ্য উৎপাদনে সংকট দেখা দিতে পারে। স্থানীয় কৃষক রানা হোসেন বলেন, তামাকজাত কোম্পানির লোভনীয় সুবিধা এবং কৃষি বিভাগের উদাসীনতার কারণে দৌলতপুরে তামাক চাষ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ভবিষ্যতে খাদ্যশস্য উৎপাদনে বিপর্যয় ঘটাতে পারে।
তামাক চাষের ফলে শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সারসহ নানা ধরণের জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। স্থানীয় চিকিৎসক ডা. হাফিউর রহমান পলাশ বলেন, তামাক চাষ নিয়ন্ত্রিত না হলে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে কৃষক পরিবার ও জনসাধারণ।
এদিকে, উপজেলা কৃষি অফিসার নুরুল ইসলাম জানান, কৃষকদের তামাক চাষ থেকে বিরত রাখতে তারা বিভিন্ন ইউনিয়নে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতনতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে তামাকজাত কোম্পানির প্রলোভন এবং অধিক মুনাফার আশায় কৃষকরা তামাক চাষে ঝুঁকছেন।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে কৃষক ও খামারীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার তামাক চাষের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "কুষ্টিয়ার মানুষ তামাকের মধ্যে বসে আছে, অথচ কেউ এর বিপদ নিয়ে কথা বলছে না।"
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তামাক চাষ নিয়ন্ত্রিত না হলে জেলায় খাদ্য উৎপাদনে ঘাটতি এবং জনসাধারণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি পাবে।
ইএইচ