নেত্রকোণার কলমাকান্দায় ব্যবসায়ী মিলন মিয়াকে গলা কেটে হত্যার দায়ে একজনকে মৃত্যুদণ্ড অপরজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার (১১মার্চ) বেলা আড়াইটার দিকে নেত্রকোণা জেলা ও দায়রা জজ মো. হাফিজুর রহমান আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় প্রদান করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন কলমাকান্দা উপজেলার কালাইকান্দি মো. মজিবুর রহমানের পুত্র মো. শাহজাহান মিয়া আর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন হরিনাকুন্ডু গ্রামের মনসুর আলীর পুত্র আবুল বাশার ওরফে বাদশা মিয়া।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে প্রকাশ, কলমাকান্দা উপজেলার কালাইকাম্দি গ্রামের কালাচাঁন মিয়ার পুত্র কাপড়ের দোকান, টেইলার্স, বিকাশ ও ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী মিলন মিয়া ও তারই পার্শ্ববর্তী দোকানদার একই গ্রামের মজিবুর রহমানের পুত্র বিকাশ ও ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান মিয়ার মধ্যে ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। ঘটনার ২/৩ দিন আগে মিলন মিয়া পাওনা দেড় লাখ টাকার তাগাদা দিলে শাহজাহান মিয়া তার মোটর সাইকেল বিক্রি করে টাকা দেয়ার আশ্বাস দেন। বিগত ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাতে মিলন মিয়া রাতের খাওয়া শেষ করে নিজ বসত ঘরে ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন ভোরে তার মা সাজেদা খাতুন ছেলেকে ঘরে দেখতে না পেয়ে আশপাশে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে রক্তমাখা ছেলের পরিধেয় কাপড় চোপড় টিউবওয়েলের পাশে পড়ে থাকতে দেখে ডাক চিৎকার শুরু কর। আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে এসে শাহজাহানের দোকানের পিছনে একটি বাগানে মিলন মিয়ার গলা কাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখে।
বিষয়টি কলমাকান্দা থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ ব্যাপারে নিহতের বড় ভাই শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে কলমাকান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত শেষে দুই আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ শীট দাখিল করে। বিজ্ঞ বিচারক আদালতে উপস্থাপিত কাগজপত্র ও স্বাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহনান্তে আসামিদের বিরুদ্ধে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামি শাহজাহান মিয়াকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নির্দেশ এবং অপর আসামি আবুল বাশার ওরফে বাদশা মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরো এক বছর কারাদণ্ড প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পিপি অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম আর আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম খান ও মানবেন্দ্র বিশ্বাস উজ্জ্বল।
আরএস