নবাবগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ হাট-বাজার থেকে বোতলজাত সয়াবিন তেল উধাও হয়ে গেছে। পাইকারি ও ডিলার পর্যায়ে সরবরাহ কম থাকায় খুচরা ব্যবসায়ীরা চাহিদামতো তেল দিতে পারছেন না। ফলে ভোক্তারা পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, ডিলাররা চাহিদার তুলনায় অনেক কম পরিমাণ তেল সরবরাহ করছেন। পাঁচ কার্টন অর্ডার করলেও মিলছে মাত্র এক-দুই কার্টন। এতে করে বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে।
নবাবগঞ্জ বাজার, বাগমারা বাজার, পাড়াগ্রাম বাজার, শোল্লা বাজার, বান্দুরা বাজার, আগলা বাজার, সিংজোর বাজার, কোমরগঞ্জ বাজার, বারুয়াখালী বাজার, শিকারীপাড়া বাজারসহ গোবিন্দপুর, চুড়াইন, গালিমপুর, তুইতাল, বাংলাবাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, চাহিদামতো সয়াবিন তেল না পাওয়ায় বিক্রেতারা বিপাকে পড়েছেন।
সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন তেল। এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের নির্ধারিত মূল্য ১৭৫ টাকা হলেও, বিক্রেতারা তা ১৯৫ টাকায় বিক্রি করছেন। খোলা সয়াবিন তেলের নির্ধারিত দাম ১৫৭ টাকা হলেও বাজারে ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বান্দুরা বাজারে তেল কিনতে এসে গৃহবধূ মিম আক্তার বলেন, "পাঁচটি দোকান ঘুরেও বোতলজাত সয়াবিন তেল পাইনি। মনে হচ্ছে, তেল একেবারে উধাও হয়ে গেছে।"
একই অবস্থা পাড়াগ্রাম বাজারে। মো. হালিম বলেন, "প্রতিদিনের মতো বাজারে গিয়ে দেখি বোতলজাত তেল নেই। বাধ্য হয়ে খোলা সয়াবিন তেল লিটারে ২০০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে।"
এক মুদি ব্যবসায়ী জানান, দেশের প্রধান তেল সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো যথাযথভাবে ডিলারদের তেল দিচ্ছে না। রোজার বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় সংকট তৈরি হয়েছে। দাম বাড়ানোর কৌশল হিসেবেই কোম্পানিগুলো তেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করছেন ব্যবসায়ীরা।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলরুবা ইসলাম জানান, "ভোক্তারা এক ও দুই লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল পাচ্ছেন না—এমন অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা প্রশাসন বাজারে অভিযান চালিয়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন। বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন নিয়মিত মনিটরিং করছে।"
সরকার সম্প্রতি বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৫ টাকা নির্ধারণ করলেও নতুন করে আবারও দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব আসছে বলে জানা গেছে। এতে স্বল্প আয়ের মানুষ আরও বেশি সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইএইচ