প্রতি বছর ঈদে যাত্রীচাপ বেড়ে যায় দক্ষিণাঞ্চলের সড়কপথে। এ কারণে বরিশালে পুরোনো বাস মেরামত করে নতুন রূপে সড়কে নামানোর কাজ চলছে পুরোদমে। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্কশপে দিন-রাত চলছে এসব লক্কড়-ঝক্কড় বাসের সংস্কার ও রঙ করার কাজ।
পদ্মা সেতু চালুর পর নদীপথের তুলনায় সড়কপথে যাত্রীদের চাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বরিশালের নথুল্লাবাদ ও রূপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে প্রতিদিন সহস্রাধিক বাস অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার রুটে চলাচল করে। ঈদের সময় যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ সামলাতে অনেক পরিবহন মালিক পুরোনো বাস মেরামত করে নতুনভাবে রাস্তায় নামানোর চেষ্টা করছেন।
ওয়ার্কশপের শ্রমিকরা জানান, ঈদের সময় যাত্রীসংখ্যা বাড়ায় বাস সংস্কার ও রঙের কাজ চলছে পুরোদমে। পুরোনো বাসগুলোর রঙ বদলে নতুনের মতো করে তোলা হচ্ছে।
এক শ্রমিক বলেন, "ঈদের আগেই সব অর্ডার শেষ করতে হবে, তাই দম ফেলার ফুরসত নেই।"
তবে সচেতন মহল মনে করছে, এভাবে ফিটনেসবিহীন বাস সড়কে নামানো হলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যাবে। বাস মালিক সমিতির দাবি, নিরাপদ যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
রূপাতলী বাস মালিক সমিতির সভাপতি জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, "আমরা যাত্রীদের সেবার জন্য কমিটি গঠন করেছি। কোনো শ্রমিক যাত্রীদের জিম্মি করে বাড়তি ভাড়া আদায় করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
বরিশালের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, "ঈদে বিপুলসংখ্যক মানুষ বরিশালে আসবে। কোনো ফিটনেসবিহীন গাড়ি যেন সড়কে চলতে না পারে, সে বিষয়ে প্রশাসনের টিম কাজ করবে।"
বরিশাল বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক খালিদ মাহমুদ জানান, "সড়কে লক্কড়-ঝক্কড় বাস চলাচলের সুযোগ নেই। ফিটনেসবিহীন গাড়ি ধরতে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে এবং ঈদে এটি আরও কঠোর হবে।"
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, "ফিটনেসবিহীন বাস চলাচল ঠেকাতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি বেপরোয়া চালকদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" প্রতি ঈদে বরিশাল জেলায় অন্তত ২৫-৩০ লাখ মানুষ যাতায়াত করেন। তাই জনসাধারণ ও সচেতন মহল প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন, উৎসবের সময়ে ফিটনেসবিহীন বাসের চলাচল বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।
ইএইচ