সন্দ্বীপের শতবছরের নৌ যাতায়াতের লাঞ্চনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে যাতায়াতের সহলভ্যর জন্য বাসবাড়িয়া (সীতাকুণ্ড) গুপ্তছড়া( সন্দ্বীপ) ফেরি সার্বিস উদ্বোধন করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ মার্চ) নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৮ টায় চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলাধীন বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নস্থ বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাটে ও বেলা ১০ টায় গুপ্তছড়া ঘাটে ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
এ উপলক্ষে বেলা সাড়ে এগারোটায় সন্দ্বীপ উপজেলা পরিষদ মাঠে সুধী সমাবেশে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ এর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি উপস্থিতির মাধ্যমে প্রধান অতিথির ভাষণ প্রদান করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইডব্লিউটিএ`র চেয়ারম্যান কমোডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বক্তব্যে বলেন, আজ শুধু সন্দ্বীপ নয়, পুরো চট্টগ্রাম বাসীর জন্য একটি আনন্দের দিন, সন্দ্বীপ বাসীর জন্য একটি স্মরণীয় দিন, অবশেষে সন্দ্বীপের মানুষের নিরাপদ নৌ যাতায়াত নিশ্চিত করতে পেরেছি। শিশু- বৃদ্ধ অসুস্থ তাদের নিয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম ভ্রমণ নিশ্চিত করা যাবে।
সন্দ্বীপ বাংলাদেশের অন্যতম একটি উপকূলীয় দ্বীপ স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর ও মূল ভূখণ্ডের সাথে যোগাযোগের কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নি।এটি খুবই লজ্জার। দেশের সব কিছু ঠিকমতো চলছে কিন্তু সন্দ্বীপে আসতে নিজের বাড়িতে যাওয়ার সময় মধ্য যুগীয় অবস্থা বিরাজ করে, এটা নিয়ে কেউ কাজ করে নি। আজকে আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্ত হলাম। এখন শুধু নিজেরা যাব না, বন্ধু বান্ধব, আত্মীয় -স্বজন কে নিয়ে ভ্রমণ করতে যাবেন।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, সন্দ্বীপের লোকজন আপনারা যে পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠান সে রেমিট্যান্সের ক্ষুদ্র একটি অংশ কাজে লাগান, তাতে যাতায়াতের সুবিধার আগামীতে আরো বেশি কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে সন্দ্বীপ। সন্দ্বীপে ঝড় জলোচ্ছ্বাস মোকাবিলা করে আপনাদের টিকে থাকতে হয়, এখানে সন্দ্বীপ থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে রাস্তায় মারা যেতে হয় কি দুঃখের কথা, আমরা সভ্য জগতে আছি, যাতায়াতের অভাবে এখান থেকে রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। সন্দ্বীপ নৌ বন্দর ঘোষণা, কুমিরা গুপ্তছড়া ঘাট উন্মুক্ত ঘোষণা, ঢাকা কুমিরা বাস সার্বিস চালু করা হয়েছে এই ছোট ছোট কাজ গুলি এখানকার আমূল পরিবর্তন আনবে। ফেরি সার্বিস সংযোগ সড়ক নির্মাণে ড্রেজিং কাজ ও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এটাতে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি কমে আসবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়,সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ডা: বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মিস ফরিদা আখতার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) মো. খোদা বকস চৌধুরী। প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) অধ্যাপক ডা.মো. সায়েদুর রহমান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিএমডব্লিউটিসি`র চেয়ারম্যান মো. সলিমুল্লাহ, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, অধিদপ্তরের সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. হাসান, ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার বিগ্রেড বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. শামসুল আলম, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম শান্তু, সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম, সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিগ্যান চাকমা,সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা কামাল পাশা, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিল্টন ভুঁইয়া, চট্টগ্রাম উত্তরজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু তাহের, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলমগীর হোসেন ঠাকুর, চট্টগ্রাম উত্তরজেলা জামায়েতের আমির আলাউদ্দিন সিকদার।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমাজের নেতৃবৃন্দ, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ব্যক্তিবর্গ।
বিআরইউ