টেন্ডার বিক্রির আগেই কাজ শেষ, নিউজ প্রকাশের পর দুদকের অভিযান

মিরাজ আহমেদ, মাগুরা প্রকাশিত: মার্চ ২৪, ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম

টেন্ডার বিক্রির আগেই কাজ শেষ,নিউজ প্রকাশের পর মাগুরায় দুদকের অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।মাগুরা গণপূর্ত বিভাগ টেন্ডারের (দরপত্র) শিডিউল বিক্রির আগেই প্রায় কোটি টাকার কাজ পছন্দের ঠিকাদারের কাছে বণ্টন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়,ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কয়েক বছর আগেই এ কাজ শেষ করেছেন মাগুরা গণপূর্ত বিভাগ। এপিপির কাজ এলটিএম বাদে দরপত্র আহ্বান করা নিষেধ থাকলেও ওটিএম এর মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ইজিপি (রাজস্ব) আওতায় ১০টি প্রকল্পে মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজের স্বাক্ষরে ১০-ফেব্রুয়ারি (ওটিএম) দরপত্র আহ্বান করা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দরপত্র ১০টির মধ্যে ৪টি ওটিএম, ৬টি এলটিএম দরপত্র আহ্বান করা হয়।বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী,গত ২৪-ফেব্রুয়ারি দুপুর ১২টায় টেন্ডার খোলা হয়।

তবে সর্বমোট কতটি টেন্ডার জমা পড়েছে সে বিষয়ে কোন তথ্য দিতে রাজি নন মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজ,নির্বাহী প্রকৌশলী মাগুরা গণপূর্ত বিভাগ,মাগুরা।তবে সরেজমিনে দেখা যায়,টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১৬,কাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বাসভবনের রাস্তা নির্মাণ এবং হাঁটার পথ সংস্কার।প্রাক্কলিত মূল্য টাকা-৮.০০ থেকে ৯.০০ লক্ষ।টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১৫,মাগুরা ডিসি অফিসের বাগানের আনুষঙ্গিক মেরামত,অফিসের চারপাশে ধাতব হ্যালাইড স্থাপন।প্রধান ফটকে পি-৬ মনিটরের মেরামত।যার প্রাক্কলিত মূল্য টাকা-৪.০০ থেকে ৫.০০ লক্ষ। টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১৩, মাগুরা সার্কিট হাউসে চারটি সাধারণ কক্ষের সংস্কার ও আধুনিকীকরণ শৌচাগারের টাইলস প্রতিস্থাপন,দরজা প্রতিস্থাপন,যার প্রাক্কলিত মূল্য-৯.০০ থেকে ১৯.০০ লাখ টাকা।টেন্ডার আইডি নম্বর-১০৭২৭১১, নির্বাহী প্রকৌশলী গণপূর্ত মাগুরার বাসভবনে নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে সীমানা প্রাচীরের উপরে সম্প্রসারণ। প্রাক্কলিত মূল্য-১২.০০ থেকে ১৩.০০ লাখ টাকা। ওই নোটিশের কাজসহ নাম না জানা আরো অনেক কাজ এক বছর আগেই শেষ হয়েছে।

তবে এ ঘটনার উক্ত বিষয়ে পত্রিকায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ‍‍`টেন্ডার বিক্রির আগেই কাজ শেষ‍‍` শিরোনামে একটি নিউজ প্রকাশিত হয় আর তারই ধারাবাহিকতায় আজ সকালে দুদকের একটি টিম মাগুরা গণপূর্ত বিভাগে আসেন।এ সময় তারা মাগুরা সার্কিট হাউস,মাগুরা ডিসি অফিস, গণপূর্ত নির্বাহী প্রকৌশলী বাসভবন ও অন্যান্য যে সকল স্থানে কি কি কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে সেগুলো তদন্ত করে দেখেন।

উক্ত বিষয় অভিযানে আসা ঝিনাইদহ দুদকের উপ পরিচালক তরুণ কান্তি ঘোষ দুপুরে গণ মাধ্যম কে বলেন,মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট একটি অভিযোগের ভিত্তিতে আজ দুদকের এ অভিযান পরিচালিত হয়েছে। মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের বাস্তবায়িত বিভিন্ন কাজ পর্যালোচনা করে দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার বলেন, গণপূর্ত বিভাগের এমন টেন্ডার স্বৈরাচার শাসনামলে অনেক বার হয়েছে। অথচ ভবনটির নোটিশ বোর্ডে এ বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়নি। শিডিউল কিনতে গিয়ে জানতে পারেন কাজগুলো আগে থেকেই কর্মকর্তার সুবিধামতো ঠিকাদারদের বরাদ্দ দিয়েছে। এটা এক প্রকার অনিয়ম। এতে কাজের গুণগত মান খারাপ হবে। 

এ বিষয় গতকাল মাগুরা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নাহিদ পারভেজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে। এতে নাগরিকদের দীর্ঘসময় ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এ কারণে নাগরিকের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে টেন্ডারের আগেই কাজ শুরু করেছেন।

বিআরইউ