মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে মো. হৃদয় হোসেন (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এদিকে নির্যাতনের শিকার স্কুলছাত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় মানসিক হাসপাতালে রেফার্ড করেছে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক।
মঙ্গলবার দুপুরে শিবালয় উপজেলার আরুয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শালজানা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার যুবক ওই এলাকার আজিজ খাঁ’র ছেলে।
আদালতের মামলা সূত্রে জানা যায়, স্কুলে যাওয়া আসার সময় আসামি হৃদয় রাস্তাঘাটে ভিকটিমকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতো। এতে কোন সাড়া না পাওয়ায় গত ১৩ মার্চ রাতে ওই স্কুলছাত্রী প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে টয়লেট এ যাওয়ার সময় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা আসামি হৃদয় ওই স্কুলছাত্রীর মুখমণ্ডলে চেতনানাশক মেডিসিন মিশ্রিত পানি ছিটিয়ে তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে ওই স্কুলছাত্রীর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে গেলে ১৯ মার্চ তাকে নিয়ে হৃদয় বাড়ি আসে। পরে হৃদয়ের ভাই ওই স্কুলছাত্রীকে তার পরিবারের নিকট ফিরিয়ে দেন।
মামলার বাদী ভিকটিমের বড় ভাই মামলার বাদী বলেন, হৃদয় আমার বোনকে ফেরত দেওয়ার পর প্রথমে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। পরে সেখান থেকে মানিকগঞ্জ জেলা হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে কয়েকদিন ভর্তি থাকার পর বোনের শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে জাতীয় মানসিক হাসপাতালে রেফার্ড করেছেন। বিষয়টি শিবালয় থানা পুলিশে জানানো হলে তারা আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে আদালতে মামলা করা হয় বলে তিনি জানান।
ভিকটিমের মা বলেন, ৫ মেয়ে আর এক ছেলেকে নিয়ে তার সংসার। ওদের বাবা মারা গেছে বহু আগে। অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করতে হয়। ওই মেয়েটা সবার ছোট। আমার ছেলে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজে বি.বি.এ পড়ে। এর পাশাপাশি একটি এনজিও’তে চাকুরি করে। ওই টাকায় সংসার চলে। কিন্তু এর মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে গেলো। ঢাকা নিয়ে মেয়েকে চিকিৎসা করার মতো কোন টাকাও নেই। তার মেয়ের এই অবস্থার জন্য দায়ী ব্যক্তির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন তিনি।
এই বিষয়ে ভুক্তভোগীপক্ষের আইনজীবী খন্দকার সুজন হোসেন বলেন, স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের বিষয়ে ২৩ই মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মিস পিটিশন মামলা দায়ের করা হয়। আদালতের বিচারক অভিযোগটি আমলে নিয়ে শিবালয় থানা পুলিশকে অভিযোগটি এফ.আই.আর করার নির্দেশ দিলে পুলিশ মামলার প্রধান আসামি হৃদয়কে গ্রেপ্তার করে। এতে করে ভিকটিম ন্যায় বিচার পাওয়ার পথ সুগম হয়।
শিবালয় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, আদালতের নির্দেশের এ ঘটনায় থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ভিকটিমকে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
ইএইচ