টানা খরা ও অনাবৃষ্টিতে ৫০ শতাংশ বোরো ধান বিনষ্টের আশঙ্কা

মীর মো. আব্দুল কাদির, হবিগঞ্জ প্রকাশিত: এপ্রিল ৬, ২০২৫, ০২:৩৪ পিএম

হবিগঞ্জের কৃষকদের মুখে এখন আর নেই আগের সেই হাসি। টানা খরা ও অনাবৃষ্টিতে শুকিয়ে যাচ্ছে জেলার বিস্তীর্ণ হাওরের জমি, হুমকিতে পড়েছে বোরো ধানের ফলন। কৃষকরা আশঙ্কা করছেন, চলমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বোরো ধান বিনষ্ট হতে পারে।

রোববার সকালে হবিগঞ্জ শহরের নিউফিল্ড মাঠে সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণে বৃষ্টির জন্য বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

জেলার বিভিন্ন উপজেলাতেও বিগত কয়েকদিনে এ ধরনের দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।

হবিগঞ্জ জেলার ১৪টি হাওরের মোট আয়তন ১,০৯৫.১৩ বর্গকিলোমিটার। কৃষকরা আশাবাদী মনোভাব নিয়ে এই হাওরগুলোতে বোরো ধান চাষ করেছেন। শুরুতে ফলনও ভালো হয়েছিল, মাঠজুড়ে সবুজের সমারোহে কৃষকরা নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু চৈত্র মাসের শেষপ্রান্তে এসে খরা ও অনাবৃষ্টিতে মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। হাওরের বিলগুলো শুকিয়ে গেছে, সেচের জন্য পর্যাপ্ত পানি নেই, ধানের শীষ বিবর্ণ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে।

বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, লাখাইসহ জেলার ৯টি উপজেলার বিস্তীর্ণ হাওরে সুগন্ধিযুক্ত ও সুস্বাদু জাতের বোরো ধান উৎপাদিত হয়ে থাকে। এ ধান জেলার বার্ষিক খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দেশের অন্যান্য স্থানে রপ্তানি করা হয়।

গুগুয়ারজুরী হাওরের কৃষক আলখাছ মিয়া, কবির আহমেদ ও আলফু মিয়াসহ অনেকেই অভিযোগ করেছেন, ধান রোপণের আগে হাওরের বিল ও নদী শুকিয়ে মাছ ধরার কারণে পানি সংকট তৈরি হয়েছে। ফলে ধানে থোড় আসার আগেই জমি শুকিয়ে যাওয়ায় ধান বিবর্ণ রঙ ধারণ করছে।

অনেক কৃষক শত শত ফুট দূর থেকে পাইপ বসিয়ে জমিতে সেচ দেওয়ার চেষ্টা করছেন, কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। এতে লাভের চেয়ে ক্ষতির আশঙ্কাই বেশি। এছাড়া পানি সংকটের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগবালাইতেও আক্রান্ত হচ্ছে ধানক্ষেতগুলো।

চাষিরা অভিযোগ করেন, এমন সংকটকালেও কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের হাওরে দেখা যাচ্ছে না। এতে বোরো ধানের কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

এ বিষয়ে হবিগঞ্জ জেলা কৃষি কর্মকর্তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ইএইচ