কক্সবাজার সৈকতে বিপন্ন প্রজাতির ২৫০ কাছিমের বাচ্চা অবমুক্ত

আবদুল হালিম, কক্সবাজার প্রকাশিত: এপ্রিল ৯, ২০২৫, ০৪:৩৭ পিএম

কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে ২৫০টি অলিভ রিডলি প্রজাতির কাছিমের বাচ্চা অবমুক্ত করা হয়েছে। কক্সবাজার বনবিভাগ ও নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (নেকম) এর যৌথ ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত নার্সারিতে জন্ম নেওয়া এসব কাছিমের বাচ্চা বুধবার (৯ এপ্রিল) ইনানী সৈকতে অবমুক্ত করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক ড. মোল্যা রেজাউল করিম।

কাছিমের বাচ্চা অবমুক্ত করার সময় তিনি বলেন, "অলিভ রিডলি টারটল বা জলপাই রঙা সামুদ্রিক কাছিমের বৃহৎ আবাস বঙ্গোপসাগর। সাগরের জীববৈচিত্র্যের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশটি প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য ও ইকোসিস্টেম সংরক্ষণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"

প্রতিবছর শীতকালে, এসব কাছিম উপকূলীয় বালুকাময় সৈকতে এসে ডিম পাড়ে এবং বাচ্চা ফোটায়। তবে, ডিম পাড়ার সময় সৈকতে বিচরণকারী কুকুরের আক্রমণ ও অন্যান্য বিপদে কাছিম ও তাদের ডিম ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমনকি মা কাছিম মারা যায়।

কাছিমের বাচ্চা অবমুক্ত কার্যক্রমে আরও উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম, কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বদরুজ্জামান, নেকমের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ম্যানেজার আব্দুল কাইয়ুম, এবং কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

নেকমের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ম্যানেজার আব্দুল কাইয়ুম বলেন, "কক্সবাজারে ১২টি পয়েন্ট থেকে ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ৬ হাজার কাছিমের ছানা অবমুক্ত করা হয়েছে।"

পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ জলপাই রঙা সামুদ্রিক কাছিম ডিম দিতে আসে। কক্সবাজার বনবিভাগ ও নেকমের যৌথ ব্যবস্থাপনায় এসব কাছিমের ডিম পাড়ার নিরাপত্তা এবং বাচ্চা ফোটানোর জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা হয়। কক্সবাজার শহর থেকে টেকনাফ পর্যন্ত ১২টিরও বেশি পয়েন্টে ডিম সংগ্রহ করে নার্সারি স্থাপন করা হয়েছে। এসব নার্সারিতে প্রায় ২৬,৭৭০টি ডিম সংগ্রহ করে সঠিক পরিচর্যা ও ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে। নেকমের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ৬,০০০ এরও বেশি বাচ্চা ফোটানো সম্ভব হয়েছে।

সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, এক দশক আগে যেখানে সামুদ্রিক কাছিম ৫২টি স্পটে ডিম পাড়তে আসত, বর্তমানে তা মাত্র ৩৪টি স্পটে এসে ডিম পাড়ছে, যা সামুদ্রিক কাছিমের ডিমপাড়ার স্থানগুলোর সংকট ও হুমকির ইঙ্গিত দেয়।

ইএইচ