লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিয়ালখোওয়া এস.সি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে আবারও হাট বসানোর পাঁয়তারা চালাচ্ছে ইজারাদার। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ।
এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সচেতন মহল। ইতোমধ্যে হাট না বসানোর দাবিতে উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন অভিভাবকরা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীরা জানান, উপজেলার শিয়ালখোওয়া এস.সি স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে সপ্তাহের শনিবার ও বুধবার নিয়মিত হাট বসত। পরে শিক্ষার্থীদের দাবি ও স্থানীয় সচেতন মহলের দাবির প্রেক্ষিতে হাটটি সড়িয়ে নেওয়া হয়, এবং শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসে।
তবে সম্প্রতি এক প্রভাবশালী ব্যক্তি হাটটি ইজারা নেওয়ার পর আবারও সেখানে হাট বসানোর উদ্যোগ নিচ্ছেন।
অভিভাবক সমাজের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এস.সি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও তিনটি কিন্ডারগার্টেন মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থীর একমাত্র খেলার মাঠে হাট বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সেখানে তামাক, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি, সাইকেল, মাছসহ বিভিন্ন সামগ্রীর কেনাবেচা হবে। এতে অতিরিক্ত ভিড়, শব্দদূষণ এবং পশু জবাইয়ের বর্জ্য শিক্ষার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। পাশাপাশি সামাজিক অপরাধও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শিয়ালখোওয়া হাটের ইজারাদার আসাদুল ইসলাম হিরুর মন্তব্য নেওয়ার জন্য একাধিকবার ফোন করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
শিয়ালখোওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাশেম আলী বলেন, “বিদ্যালয়ের মাঠে হাট বসলে শিক্ষার্থীদের ওপর অবশ্যই প্রভাব পড়বে।” তবে কারা প্রভাব খাটাচ্ছে সে বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
শিয়ালখোওয়া এস.সি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনীন্দ্র নাথ রায় বলেন, “অতিরিক্ত লোকসমাগম হলে শিক্ষার্থীদের মনোযোগে প্রভাব পড়বে।” তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বলেও জানান তিনি।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা বলেন, “পূর্বে ওই মাঠে হাট বসত, কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তা বন্ধ করা হয়। এখন ইজারাদার ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। শিক্ষার পরিবেশ রক্ষায় বিকল্প স্থান খোঁজা হচ্ছে। এখনো পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।”
লালমনিরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুজিবর রহমান বলেন, “যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে আগে হাট বসত, সেগুলো সড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শিয়ালখোওয়ার দুই প্রতিষ্ঠানের অভিভাবকদের অভিযোগ সম্পর্কে অবগত আছি এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ইএইচ