মিরপুরে প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের মতবিনিময়

নজরুল ইসলাম মুকুল, কুষ্টিয়া প্রকাশিত: এপ্রিল ১৩, ২০২৫, ০৮:২৬ পিএম

দীর্ঘদিন ধরে দেশের মানুষের প্রকৃত গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও বাক-স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। মানুষ নিজেদের কথা বলতেও ভয় পেত। এসব কারণেই ৫ আগস্টের মতো দিনের জন্ম হয়েছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে এখনো পুলিশ প্রশাসন পুরোপুরি স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হয়নি। তবে একটি নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব গ্রহণ না করা পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান সাবেক সংসদ সদস্য, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম।

রোববার দুপুরে কুষ্টিয়ার মিরপুর প্রেস ক্লাবের নিজস্ব কার্যালয়ে উপজেলা প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে সাংবাদিকদের এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাদক নিয়ে তিনি বলেন, “মাদকসেবী বা ব্যবসায়ীদের বিষয়ে কোনো ছাড় নেই। প্রতিটি এলাকায় মাদক নির্মূলে কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নিতে হবে। কেউ মাদকসেবীর পক্ষে সুপারিশ করলে তাকে অন্তত সাত দিনের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ডের ব্যবস্থা করতে হবে।”

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “দয়া করে উপজেলা বা থানাকে দলীয় কার্যালয় বানাবেন না। প্রয়োজনীয় কাজ শেষে দ্রুত চলে যাবেন। কেউ অন্যায় আবদার করলে প্রশাসন যেন সেটিকে প্রশ্রয় না দেয়।”

তিনি আরও বলেন, “মাঝে মাঝে কিছু অপশক্তি মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করে, তাদের রুখে দিতে হবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে সজাগ থাকতে হবে।”

মিরপুর প্রসঙ্গে অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম বলেন, “মিরপুরের মাটি ও মানুষের সঙ্গে আমার জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় কেটেছে। ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে আমি সরাসরি মিরপুর, ভেড়ামারা ও দৌলতপুর অঞ্চলে যুদ্ধ করেছি। সংসদ সদস্য হিসেবে মিরপুরেই সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন করেছি। সেসময় মিরপুরে কোনো পাকা রাস্তা ছিল না, চারিদিকে ছিল কাদা। বিদ্যুৎ ছিল না, উন্নয়নের ছোঁয়াও ছিল না। আজ মিরপুর-ভেড়ামারায় যত পাকা রাস্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যত ভবন—সব আমার আমলে হয়েছে।”

পরিশেষে, মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও রেলস্টেশনের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।

প্রেস ক্লাবের সভাপতি মারফত আফ্রিদীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রাশেদুজ্জামান রিমনের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী মেশকাতুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পিযুষ কুমার সাহা, কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল কাফি, প্রকৌশলী জহির মেহেদী হাসান, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাঈফ আহমেদ নাসিম, প্রকল্প কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান, বন কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ, মিরপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ প্রমুখ।

উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আশরাফুজ্জামান শাহীন, সদস্য সচিব রহমত আলী রব্বানী, যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক বাবু, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ, সদস্য সচিব আজাদুর রহমান বিশ্বাস, ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি খন্দকার টিপু সুলতান, উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির শাহ আক্তার মামুনসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

প্রেস ক্লাবের পক্ষে বক্তব্য দেন সাবেক সভাপতি বাবলু রঞ্জন বিশ্বাস, হাজী আসাদুর রহমান বাবু ও সাবেক আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির হিমু। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সাবেক সভাপতি কাঞ্চন কুমার হাওলাদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ জোয়ার্দ্দার, সাংগঠনিক সম্পাদক কুদরতে খোদা সবুজ, ক্রীড়া ও সাহিত্য সম্পাদক আব্দুল মালেক জোয়ার্দ্দার, সদস্য মিলন আলী, শেফাদুল হক চান্নু, কামাল হোসেন প্রমুখ।

ইএইচ