চরবাসীর দুঃখ ঘোচাতে ক্লান্তিহীন ছুটে চলছেন জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা

সাইফুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৫, ০৫:১৪ পিএম

দারিদ্র্যপ্রবণ ও দুর্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে পরিচিত কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ছোট-বড় ১৬টি নদ-নদী। প্রতিবছর বন্যা, নদীভাঙন, শীতসহ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব এই জেলার জনজীবনকে করে তোলে বিপর্যস্ত। নদীভাঙনের ফলে প্রতি বছর আবাদি জমি ও বসতভিটা বিলীন হয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে।

কৃষিকাজ চরাঞ্চলের প্রধান পেশা হলেও বন্যার পূর্ব ও পরবর্তী প্রায় তিন মাস কর্মহীন থাকেন চরবাসীরা। ফলে নদীর কূলে বসবাসকারী মানুষগুলো দিন দিন দারিদ্র্যের দুঃসহ চক্রে আবদ্ধ হয়ে পড়ছেন। পাশাপাশি উন্নত যোগাযোগ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

এই বাস্তবতায় কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা চরাঞ্চলের মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা ও খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কখনো মোটরসাইকেলে, কখনো নৌকায়, আবার কখনো ঘোড়ার গাড়ি কিংবা পায়ে হেঁটেই তিনি ছুটে চলেছেন প্রত্যন্ত চরের মানুষের পাশে দাঁড়াতে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার তিনি পৌঁছে যান নাগেশ্বরী উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের দুর্গম চর লুছনীতে। সেখানে সুবিধাবঞ্চিত নারীদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। চর লুছনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া নারীদের সঙ্গে কথা বলেন জেলা প্রশাসক এবং তাদের আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দেন।

জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, “জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। চরের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আধুনিকায়নে কাজ চলছে। এ লক্ষ্যে একটি ‘চর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়’ গঠনের প্রস্তাব অনেকদূর অগ্রসর হয়েছে। আমরা সকল সরকারি দপ্তর এবং কুড়িগ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে চরের মানুষের উন্নয়নে একযোগে কাজ করবো।”

জেলা প্রশাসকের এই মানবিক উদ্যোগ চরবাসীর জীবনে আশার আলো হয়ে উঠেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

ইএইচ