পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ১৫ টাকা

রাজবাড়ী প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ১৮, ২০২৫, ০৫:৪৭ পিএম

রাজবাড়ীতে গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজের কেজিপ্রতি দাম ১৫ টাকা বেড়েছে। এখন ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। হঠাৎ করে দাম বাড়ায় যেখানে একদিকে ক্রেতারা অসন্তুষ্ট, সেখানে খুশি পেঁয়াজ চাষিরা।

তাদের দাবি, পেঁয়াজ চাষে খরচ বেড়েছে, তাই লাভজনক মূল্য পাওয়া জরুরি।

পেঁয়াজ আমদানি বাড়লেও কৃষকদের দাবি, দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজেই দেশের চাহিদা মেটানো সম্ভব। এজন্য আমদানির প্রয়োজন নেই। কৃষি বিভাগ থেকেও জানানো হয়েছে, কৃষকদের খরচ বিবেচনায় নিয়ে একটি যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের জন্য সরকারকে সুপারিশ করা হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে রাজবাড়ী। চলতি বছর রাজবাড়ীতে ৩৭ হাজার ২৮৩ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, এই মৌসুমে ৫ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।

জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক সপ্তাহ আগেও পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। দাম কম থাকায় অনেক কৃষক মাঠ থেকে পেঁয়াজ উত্তোলন করেননি বা বাজারে তোলেননি। কিন্তু হঠাৎ করে দাম বাড়ায় কৃষকরা খুশি হয়ে পেঁয়াজ বাজারে আনছেন।

চন্দনী ইউনিয়নের কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, “বর্তমানে যে দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে, তাতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। সার, কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরি—সবকিছু বেড়ে যাওয়ায় খরচও বেশি। তাই আমরা চাই সরকার যেন পেঁয়াজ আমদানি না করে।”

তিনি আরও জানান, “রাজবাড়ীর প্রায় প্রতিটি কৃষকের ঘরে এখন শত শত মণ পেঁয়াজ সংরক্ষিত রয়েছে। দেশের চাহিদা মেটাতে এই মজুদই যথেষ্ট।”

চন্দনী বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মতিউর রহমান মুন্না বলেন, “দাম বাড়ায় আমদানিও বেড়েছে। তবে এবার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কম থাকায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা কিছুটা স্বস্তিতে আছেন। এখন প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায়।”

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, “রাজবাড়ীর মাটি পেঁয়াজ চাষের উপযোগী হওয়ায় উৎপাদন বাড়ছে। নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে দেশের মোট উৎপাদনের প্রায় ১৪ শতাংশ পেঁয়াজই আসে এ জেলা থেকে।”

তিনি আরও জানান, “পেঁয়াজের আমদানি বন্ধ এবং মূল্য নির্ধারণের বিষয়ে ইতোমধ্যেই পাবনা, ফরিদপুর ও রাজবাড়ীর কর্মকর্তাদের নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সেখানে একটি নির্দিষ্ট মূল্য নির্ধারণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।”

ইএইচ