সুনামগঞ্জের একমাত্র অবহেলিত উপজেলা মধ্যনগরে রয়েছে ১৫টিরও বেশি হাওর। অথচ একটিতেও স্থাপন করা হয়নি বজ্রনিরোধক দণ্ড। ফলে প্রতি বছর বজ্রপাতে প্রাণ হারাচ্ছেন শিশু, কিশোর, কৃষক, জেলে ও গবাদিপশু।
উপজেলার চারটি ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত ৮৯টি মৌজা এবং ১৫টি বড় হাওরের সমন্বয়ে গঠিত মধ্যনগর। প্রায় দেড় লাখ জনসংখ্যার এই উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজ ও মাছ ধরাকে জীবিকার মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন। হেমন্তে সবুজ ঘেরা হাওরে ফলে সোনালি ধান, আর বর্ষায় কানায় কানায় ভরা পানিতে ভেসে ওঠে সাগরের রূপ।
এই অঞ্চলে সাধারণত মার্চ মাস থেকে শুরু হয়ে বর্ষাকালজুড়ে বজ্রপাত হয়। এতে প্রতি বছরই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের বোয়ালা, গুড়াডোবা, ছোট গুড়াডোবা, শালদীঘা ও মরিচাকুড়ি; চামরদানী ইউনিয়নের বানছাপড়া, গুরমা, কাইলানী, টগা; দক্ষিণ বংশীকুন্ডা ইউনিয়নে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম হাওর টাঙ্গুয়া এবং উত্তর বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের আরও তিনটি হাওরসহ মোট ১৫টি বড় হাওর রয়েছে। এছাড়া আরও ১০টির অধিক ছোট-বড় নাম না জানা হাওরও আছে।
হাওরগুলোতে শুকনো মৌসুমে ধানচাষ ও বর্ষায় মাছ ধরা করেন স্থানীয় কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষ। কিন্তু তাদের নিরাপত্তার জন্য কোনো হাওরেই বজ্রনিরোধক দণ্ড নেই।
এই প্রেক্ষাপটে হাওরাঞ্চলের কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের জানমাল রক্ষায় প্রতিটি হাওরে বজ্রনিরোধক দণ্ড স্থাপনের দাবিতে লিখিত আবেদন করেছেন সদর ইউনিয়নের গলইখালী গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা, কবি অসীম সরকার।
গত ২০ এপ্রিল (রোববার) তিনি এ দাবিতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে অনুলিপি প্রেরণ করেন।
জনস্বার্থে করা এই দাবিকে স্বাগত জানিয়েছেন উপজেলার সচেতন মহল।
এ বিষয়ে মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উজ্জ্বল রায় গণমাধ্যমকে বলেন, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি, যা আমি নিজেও উপলব্ধি করেছি। আমার অবস্থান থেকে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।”
ইএইচ