চুপিসারে বিক্রি হলো মাগুরা টেক্সটাইল মিল, কর্মসংস্থান হারানোর আশঙ্কা

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৫, ০৪:৫৫ পিএম

মাগুরাবাসীর কর্মসংস্থানের একমাত্র বড় আশ্রয়স্থল মাগুরা টেক্সটাইল মিল গোপনে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে—স্থানীয়দের অজান্তে, কোনো প্রকাশ্য দরপত্র ছাড়াই। ১৯৮৫ সালে যাত্রা শুরু করা এই সরকারি কারখানাটি প্রায় এক হাজার মানুষকে সরাসরি কর্মসংস্থান দিয়েছিল। আজ তার সব যন্ত্রপাতি চলে যাচ্ছে ট্রাকভর্তি করে।

স্থানীয়রা বলছেন, এটি ছিল জেলার একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান। অথচ কোনো ঘোষণা ছাড়া, কোনো মাইকিং ছাড়াই মিলের যন্ত্রপাতি বিক্রি করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় লোকজন কিনতে আগ্রহী থাকলেও তাদের সুযোগ দেওয়া হয়নি।

সূত্র জানায়, মাত্র ৩১ কোটি টাকায় বিক্রি করা হয় মিলটি। অথচ এর দৃশ্যমান সম্পদের মূল্য ২০১৩ সালেই ছিল ৫৯ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে জমির মূল্যই ছিল ৪৭ কোটি টাকা। তদুপরি, বিক্রির পরেও মিলের ১০৯ কোটি টাকার দায় পরিশোধ করতে হবে সরকারকেই।

মিলের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক মন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) মাজেদুল হকের পরিবারের সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাব্বির সিদ্দিকী রনি বলেন, ‘আমরা মিলের জমিতে মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। বিক্রির বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না।’

মিল ইনচার্জ মো. শরিফুল ইসলাম জানান, ‘ম্যাক পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ার’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৬ কোটি ২৮ লাখ টাকায় যন্ত্রপাতি ও মালামাল কিনেছে। ইতিমধ্যে ট্রাকযোগে মালামাল সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

একজন স্থানীয় ঠিকাদার অভিযোগ করেন, ‘এই বিক্রি হয়েছে কয়েকজন দালালের সমন্বয়ে, গোপনে। স্থানীয় পত্রিকায় কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়নি, নোটিশবোর্ডে টানানো হয়নি। সরকার রাজস্ব হারিয়েছে, লাভবান হয়েছে আওয়ামী ঘরানার দালালরা।’

স্থানীয়দের দাবি— বিক্রির তদন্ত ও দায়ীদের শাস্তি; পুনরায় দরপত্র আহ্বান করে স্থানীয়দের সুযোগ দেওয়া ও বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা।

মাগুরার সাধারণ মানুষ বলছেন, ১৯৭১ সালের পর অনেক নেতা এলেন, ধনী হলেন, কিন্তু কর্মসংস্থানের দিকে কেউ তাকালেন না। এই মিলটাই ছিল আমাদের আশার আলো। এখন তা-ও নেই।

বিআরইউ