মানবপাচারকারী ও প্রতারককে নওগাঁ থেকে গ্রেপ্তার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ২৬, ২০২৫, ০৮:০২ পিএম

মানবপাচারকারী ও প্রতারক জাহিদ হাসানকে নওগাঁ থেকে গ্রেপ্তার করেছে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ।

শনিবার জেলা পুলিশ মিডিয়া সেলের মাধ্যমে জানানো হয়, কুড়িগ্রাম জেলার ভিকটিম ইয়াকুব আলী গত ২৫ মার্চ একটি এজাহার দাখিল করেন। এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, প্রায় দুই বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নওগাঁ জেলার রানীনগর থানার সিংড়া পাড়ার মো. জাহিদ হাসান নামক এক ইতালি প্রবাসী পরিচয়দানকারী ব্যক্তির সাথে তার পরিচয় হয়।

পরিচয়ের কিছুদিন পর জাহিদ হাসান জানায়, ইতালিতে তার নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং তিনি অনেক মানুষকে ইতালিতে উচ্চ বেতনের চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এভাবে ভিকটিমকে প্রলোভন দেখিয়ে ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে ইতালিতে পাঠানোর চুক্তি করে। প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ টাকা অগ্রিম নেওয়া হয় এবং ইতালিতে পৌঁছানোর পর বাকি টাকা নেওয়ার কথা ছিল।

পরে ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে ভিকটিম ইয়াকুব আলীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা গ্রহণ করে। এরপর তাকে ইতালি পাঠানোর কথা বলে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে দুবাই, দুবাই থেকে নাইজার এবং সেখান থেকে বাই রোডে আলজেরিয়া নিয়ে যায়। আলজেরিয়ায় পৌঁছানোর পর ভিকটিম পুলিশের হাতে আটক হয়ে ২১ দিন জেলে থাকেন।

জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর প্রতারকের সহযোগীরা তাকে তিউনেশিয়া এবং পরে লিবিয়ায় নিয়ে যায় এবং একটি বাড়িতে আটক করে রাখে। সেখানে ভিকটিমকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে, সেই ভিডিও ধারণ করে এবং পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। এতে পরিবার বাধ্য হয়ে বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদান করে।

ভিকটিমসহ আরও অনেকের আটকে থাকার খবর বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার হলে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে ৯ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে তাদের উদ্ধার করা হয় এবং ভিকটিম নিজ বাড়িতে ফিরে আসে।

এজাহার দাখিলের পর থেকেই কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশের একটি চৌকস টিম মানব পাচারকারী চক্রটিকে ধরতে অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে, র‌্যাব-৫ নাটোরের সহযোগিতায় প্রতারক মো. জাহিদ হাসানকে নওগাঁ জেলার রানীনগর থানার সিংড়া পাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, জাহিদ হাসান বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে অনেক মানুষকে নিঃস্ব করেছে এবং অনেককেই লিবিয়া, তিউনেশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে আটকে রেখেছে। তার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদেরও আইনের আওতায় আনতে তদন্ত ও অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।

ইএইচ