চলতি অর্থবছরের (২০২২-২৩) প্রথম মাস জুলাইয়ে ২০৯ কোটি ৬৯ লাখ ১০ হাজার বা ২.১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১৯ হাজার ৮৫৬ কোটি টাকা। এই অঙ্ক গত ১৪ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। সবশেষ ২০২০ সালের মে মাসে ২ বিলিয়নের বেশি অর্থাৎ ২১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। এছাড়া গত বছরের জুলাই মাসের চেয়ে এ পরিমাণ ১২ শতাংশ বেশি। সোমবার (১ আগস্ট) প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জুলাইয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। মুসলমানদের অন্যতম বড় এ উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের পরিবার-পরিজনদের জন্য ঈদ উৎসব সুন্দরভাবে পালন করতে ও কোরবানির পশু কেনার জন্য বেশি বেশি অর্থ পাঠিয়েছেন। এসব কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন প্রক্রিয়া সহজ করেছে। সরকারও রেমিট্যান্সের প্রণোদনা বাড়ানোর পাশাপাশি নীতি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এখন ডলারের রেটও বেশি পাচ্ছে। এছাড়া গত মাসে ঈদুল আজহা ছিল, প্রবাসীরা পরিবারের ঈদ উৎসব সুন্দরভাবে পালনের জন্য অর্থ পাঠিয়েছেন। এসব কারণে রেমিট্যান্স বেড়েছে। আশা করছি এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ে তার আগের মাস জুনের চেয়ে প্রায় ২৬ কোটি ডলার বেশি এসেছে। জুন মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৩ কোটি ৭২ লাখ ডলার। তার আগের মাস মে-তে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। এছাড়া চলতি বছরের জুলাইয়ে আগের বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ২২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার বেশি এসেছে। গত বছরের জুলাই মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছিলেন ১৮৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে।
এদিকে দেশে ডলার সংকটে বাড়ছে, কমছে টাকার মান। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে এখন ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা রেটে ডলার বিক্রি করছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি আমদানি বিল মেটাতে এই দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করছে। নিয়ম অনুযায়ী এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর। এর আগে চলতি বছরের মে মাসের শুরুর দিকে এ দর ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা।
তবে বিভিন্ন ব্যাংক ও কার্ব মার্কেটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন ব্যাংকগুলো আমদানি বিলের জন্য নিচ্ছে ৯৭ থেকে ১০০ টাকার উপরে, নগদ ডলার বিক্রি করছে ১০৫ থেকে ১০৭ টাকা, আর ব্যাংকের বাহিরে খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলার বিক্রি হয় ১০৯ থেকে ১১০ টাকা।
ইএফ