ব্যবসা সহজ করতে বন্দরে টেস্টিং ল্যাব চায় এফবিসিসিআই

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২, ০৭:৪১ পিএম

আমদানিকৃত পণ্য দ্রুত খালাস ও নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন কার্যক্রমের স্বার্থেই বন্দরে টেস্টিং ল্যাব স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। 

বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত পোর্ট অ্যান্ড শিপিং বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির দ্বিতীয় সভায় এ দাবি জানান তিনি। 

মো. জসিম উদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানিকৃত পণ্যের পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য রাজধানীতে পাঠাতে হয়। এতে পণ্য খালাস করতে কয়েক সপ্তাহ বা মাস সময় লেগে যায়। যা ব্যবসার খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে, একই সাথে কারখানার নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। 

এই পরিস্থিতির উন্নয়নে বন্দরে টেস্টিং ল্যাব স্থাপন ও সংশ্লিষ্ট সেবার মানোন্নয়ন জরুরি বলে তিনি জানান। পাশাপাশি যেসব আমদানিকারক বহু বছর ধরে একই পণ্য আমদানি করছেন, তাদের প্রতিটি চালানের পণ্য পরীক্ষা না করে দৈবচয়ন ভিত্তিতে পরীক্ষা করার সুপারিশ করেছেন। 

সভায় এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু ব্যবসায়িদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন- বন্দর ও জাহাজীকরণ সংক্রান্ত সমস্যার তালিকা করে এফবিসিসিআইকে দেয়ার জন্য। 

তিনি বলেন, দেশে ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ তৈরিতে সুষ্ঠু বন্দর কার্যক্রম জরুরি। এ লক্ষ্যে এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে। 

তিনি ভারতের দেয়া ট্রানজিট সুবিধা কাজে লাগিয়ে স্থলবন্দরগুলো দিয়ে পণ্য আমদানি-রফতানি বাড়ানোর তাগিদ দেন। 

সহ-সভাপতি মো. হাবীব উল্লাহ ডন বলেন, পণ্য পরীক্ষায় ত্রু টি না পেলেও বন্দরে ১৫/২০ দিন পণ্য আটকে থাকার ফলে বন্দরের চার্জ যেমন বাড়ে, তেমনি দেরিতে পণ্য বিক্রির কারণে লোকসানও গুনতে হয় ব্যবসায়ীদের।

এর আগে স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা জানান, এইচএস কোডজনিত ভুলের কারণে আরোপিত জরিমানার ওপর ১৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা পান কাস্টমস কর্মকর্তারা। অনেক ক্ষেত্রে শুধু প্রণোদনার অর্থ পেতে কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের জরিমানা আরোপ করেন।

এই হয়রানি বন্ধে প্রণোদনার বিধান বাতিলের আহ্বান জানানো হয়। পণ্যের এইচএস কোড অন্তর্ভুক্তিকরণকে সহজ ও নির্ভুল করতে পুরো ব্যবস্থাকে অনলাইনের আওতায় আনার পরামর্শও দেন তারা।

এ সময় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া সাত দিন চব্বিশ ঘন্টা বন্দর সচল রাখার নির্দেশনা বাস্তবায়িত হচ্ছেনা। 

তারা জানান, বৃহষ্পতিবার পণ্যের পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষ হলেও শুক্র ও শনিবার পণ্য খালাস করতে পারেন না তারা। এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে পর্যাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগেরও দাবি জানানো হয়।  

কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. পারভেজ সাজ্জাদ আকতার বলেন, পদ্মাসেতু, পায়রা বন্দর, মোংলা বন্দর চালু হওয়ায় দেশের অর্থনীতিতে নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে। 

কিন্তু এসব সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বন্দর অবকাঠামোর উন্নয়ন প্রয়োজন। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন জেটি তৈরি জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, এফবিসিসিআই’র পরিচালক বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হাফেজ হারুন, মো. নাসের, আক্কাস মাহমুদ, স্ট্যান্ডিং কমিটির ডাইরেক্টর ইনচার্জ এ. এম মাহবুব চৌধুরী, কো-চেয়ারম্যান শাহেদ সরোয়ার, ক্যাপ্টেন এ এস চৌধুরী, সৈয়দ মো. বখতিয়ার, অঞ্জন শেখর দাস, অন্যান্য সদস্যবৃন্দ ও এফবিসিসিআইর মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।

টিএইচ