নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান মাইডাস ফাইন্যান্সের খেলাপি ঋণ প্রায় ৫০ শতাংশ বলে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রসাশন ও মানবসম্পদ বিভাগের সাবেক প্রধান কর্মকর্তা শামীম আহমেদ।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, দেশে কার্যরত সাতটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪২ থেকে ৯৬ শতাংশ। এর মধ্যে মাইডাস ফাইন্সের খেলাপি প্রায় ৫০ শতাংশ।
যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা যায় জুন শেষে প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ প্রায় ১৯ শতাংশ। কিন্তু এ তথ্য অসচ্ছ।
দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে চরম বিশৃঙ্খলা চলছে উল্লেখ করে শামীম আহমেদ বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে তার মধ্যে অন্যতম মাইডাস ফাইন্যান্সিং লিমিটেড।
নানা দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে প্রায় বিলুপ্ত হওয়ার পথে প্রতিষ্ঠানটি। কর্মকর্তাদের অনিয়ম দুর্নীতির কারণে হাজার হাজার আমানতকারী ও বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন।
চাকরিচ্যুত সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটিতে দীর্ঘ ১৫ বছর চাকরিকালে এসব অনিয়মের সাক্ষী ছিলাম। এ বিষয়ে দুদকে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
অনিয়মের প্রতিবাদ করায় বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।’ বারবার নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগে আবেদন সত্ত্বেও চাকরি ফেরত না পাওয়ার আক্ষেপের কথা সাংবাদিকদের জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, মাইডাসের এসব অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য প্রতিষ্ঠানটির শেয়ার হোল্ডার, বিনিয়োগকারী ও আমানতকারীদের জানানো নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে হয়েছে।
এসব অপকর্মে জড়িতদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। তাই বিষয়টি জনসম্মুখে আনতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছি। আশাকরি বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নজরে আসবে।
বর্তমান ব্যবস্থপনা পরিচালক মুস্তাফিজুর রহমানকে পিকে হালদারের বিশ্বস্ত অনুচর উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, দুঃশাসন, অব্যবস্থাপনা ও অরাজকতা সৃষ্টির অভিযোগ আনেন শামীম আহমেদ।
তিনি বলেন, বর্তমান এমডি সিন্ডিকেট গঠন, অর্থ আত্মসাত, ঘুষ লেনদেন, কেনাকাটায় দুর্নীতি, অবৈধ নিয়োগ ও ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছেন।
এ ছাড়া সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল আযম ও পর্ষদ সদস্য সামছুল আলমের বিরুদ্ধে নিজ নামে ঋণ অনুমোদন, জাল-জালিয়াতি, দুর্নীতির প্রমাণ নষ্ট করতে ঘুষ প্রদান, নারী কেলেঙ্কারি, বেতন-ভাতা ম্যানিপুলেশন, মাদক কারবার ও কোম্পানির গাড়ি-বাড়ি দখলসহ বিস্তর অভিযোগ তুলে ধরেন।
এছাড়া বর্তমান কোম্পানি সচিব তানভীর হাসানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নানা কূটকৌশলের অভিযোগ আনেন শামীম আহমেদ।
উল্লেখ্য, আশির দশকে এনজিও হিসেবে কাজ শুরু করে মাইডাস। এরপর ১৯৯৫ সালে মাইডাস ফাইন্সসিং লিমিটেড নামে যাত্রা শুরু হয়। ২০০০ সাল থেকে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচলনা করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।
টিএইচ