আমদানি পণ্য দ্রুত ছাড় নিশ্চিতে বন্দরে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং কাস্টমস ও শিপিং এজেন্টদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় ও শিল্পপণ্যসহ কাঁচামাল আমদানিকারকরা।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় এ দাবি জানান তারা।
আমদানিকারকদের অভিযোগ, পণ্য ছাড় করার ক্ষেত্রে বন্দর ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও শিপিং এজেন্টদের নানা হয়রানি করা হয়। এতে একদিকে পণ্য ছাড়ে বাড়তি সময় লাগে, অন্যদিকে খরচও বাড়ে। ফলে ব্যবসা ও উৎপাদন ব্যয়ও বেড়ে যায়।
সভায় চট্টগ্রাম বন্দরের টেস্টিং ল্যাবে অপ্রতুল সুবিধার অভিযোগ তুলে তারা জানান, ল্যাবে মাত্র একজন রাসায়নিক পরীক্ষক থাকায় পরীক্ষা কার্যক্রমে দেরি হয়। তাছাড়া এতে সবধরনের রাসায়নিক পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। তাই অনেক সময় সেগুলো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। এতে পণ্য খালাসে অতিরিক্ত খরচ হয়।
আবার এইচএস কোডের অনিচ্ছাকৃত ভুলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আড়াইশ থেকে তিনশ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানার পাশাপাশি শিপিং এজেন্টরা জাহাজ ভাড়ার বাইরে ডকুমেন্ট, সার্ভে, সিকিউরিটি চার্জসহ নানা ধরনের চার্জ আদায় করে থাকে। এতে দৈনিক প্রায় ১০ কোটি টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, অনভিজ্ঞ ব্যবসায়ীরাই এইচএস কোড সংক্রান্ত সমস্যার মূল ভুক্তভোগী। এজন্য তিনি আমদানিকারকদের এইচএস কোড সম্পর্কে ভালো করে জেনে নেয়ার পরামর্শ দেন।
পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি এগিয়ে নিতে রাজস্ব আদায়ে ব্যবসায়ীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারের কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আদায়ে সহযোগিতা করা ব্যবসায়ীদের দায়িত্ব।
ভারত ও সিঙ্গাপুরের মতো বাংলাদেশেও ভ্যাট ব্যবস্থা তুলে দিয়ে জিএসটি (সরকারি সেবা কর) চালুর ব্যাপারে ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করেন মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। জিএসটি চালু হলে রাজস্ব আদায় সহজ হবে এবং দূর্নীতি কমবে বলে মনে করেন তিনি।
কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ ও এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী জানান, ইউরোপ আমেরিকার সমমানের পণ্য এখন বাংলাদেশে তৈরি হয়। নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ স্বচ্ছতার সংস্কৃতি বজায় রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া আমদানি সহজ করতে বন্দর ডিজিটালাইজেশনের আহ্বান জানান মো. আমিন হেলালী।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান ও এটুপি গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খোরশেদ আলম। কাস্টমস ও ব্যবসায়ীদের সমস্যা নিরসনে নিয়ে কাজ হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মুক্ত আলোচনায় তুলার কমার্শিয়াল আমদানিকারকদের এলসি মার্জিনের বিধি শিথিল, পণ্য আমদানিতে প্রয়োজনীয় লাইসেন্সের সংখ্যা কমানো ও মেয়াদ বাড়ানো ও ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইনডো চালুর দাবি জানান কমিটির সদস্যরা।
সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক মো. রেজাউল করিম রেজনু, সিআইপি, রাব্বানি জব্বার, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হাফেজ হারুন, আবু মোতালেব, ইকবাল শাহরিয়ার, মোহম্মেদ বজলুর রহমান, খায়রুল হুদা চপল, কমিটির কো-চেয়ারম্যান কমিটির কো-চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী (বাচ্চু), মো. আজিজুর রহমান, মো. নাদিমুল হাকিম, সৈয়দ মো. বখতিয়ারসহ অন্যান্যরা।
টিএইচ