আইসিটি বিভাগের ফ্ল্যাগশিপ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলাদেশের ডিজিটাল ইনসিওরেন্স সার্ভিস প্ল্যাটফর্ম বিমাফাই নামক স্টার্টআপে বিনিয়োগ করেছে। বিমাফাই বাংলাদেশে গ্রাহকদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিবিধ ইনসিওরেন্স সার্ভিস দিয়ে থাকে। ১ কোটি টাকা বিনিয়োগের জন্য ঢাকায় প্রতিষ্ঠানদ্বয়ের মধ্যে বুধবার (৭ ডিসেম্বর) একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
স্টার্টআপ বাংলাদেশের বোর্ড এর চেয়ারম্যান ও আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ এর উপস্থিতিতে ঢাকার গুলশানে স্টার্টআপ বাংলাদেশের কার্যালয়ে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। স্টার্টআপ বাংলাদেশের বোর্ড মেম্বার লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) রণজিৎ কুমার, স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদসহ কোম্পানির হেড অব পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট হাসান এ. আরিফ, বিমাফাই এর চেয়ারম্যান অর্ণভ পাল, সিইও আলভী নিজাম নাফি এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারগণ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
২০১৯ সাল থেকে বীমা খাতে গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বীমা সুবিধার ডিজিটালাইজেসন নিয়ে কাজ করছে বীমাফাই। বিমাফাই অ্যাপ ও ওয়েবসাইট থেকে গ্রাহক স্বাস্থ্য-বীমা, দুর্ঘটনা-বীমা, ভ্রমন-বিমা ও মোটর-বীমাসহ অন্যান্য বীমা পলিসি পছন্দের বীমা কোম্পানি থেকে বাছাই করে কিনতে পারছেন। এ পর্যন্ত প্রায় চার লাখেরও বেশি গ্রাহককে ডিজিটাল বীমা সেবা দেয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য-বীমার দাবি নিষ্পত্তিতে অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছে বিমাফাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী দিকনির্দেশনায়, স্টার্টআপ বাংলাদেশ আইসিটি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ সরকারের একমাত্র ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি যা ৫০০ কোটি টাকা মূলধন নিয়ে ২০২০ সালের মার্চ মাসে যাত্রা শুরু করে। স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেড ডিজিটাল ইনসিওরেন্স সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দিয়ে বীমাফাইতে ১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ উপলক্ষে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি বলেন, “বাংলাদেশে স্টার্টআপরা যেসকল প্রযুক্তিভিত্তিক সমাধান নিয়ে এগিয়ে আসছে, স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশনকে বাস্তবায়িত করতে তা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে। এসকল উদ্ভাবনী স্টার্টআপদের সহায়তা প্রদান করার লক্ষ্যে সরকার স্টার্টআপ বাংলাদেশ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি গঠন করেছে। আমি আশা করি এই বিনিয়োগের মাধ্যমে বীমাফাই এই ইন্ডাস্ট্রিতে উল্লেখযোগ্য এবং ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
স্টার্টআপ বাংলাদেশের বোর্ড এর চেয়ারম্যান ও আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ বলেন, “ইনসিওরেন্স ইন্ডাস্ট্রিতে বীমাফাই যে কাজ করছে তা অত্যন্ত প্রশংসনীয় এবং বীমাফাইতে স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের বিনিয়োগ, এটিকে আরও গ্রাহকের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করবে। আমি আশা করি তারা স্টার্টআপ হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে গভীর প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে। আইসিটি বিভাগ উদীয়মান এবং দ্রুত বর্ধমান স্টার্টআপগুলোকে নীতিগত, প্রশিক্ষণ, মেন্টরিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে সহায়তা করছে।”
স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ বলেন, “স্টার্টআপ বাংলাদেশের লক্ষ্য হল দেশীয় স্টার্টআপদের দ্রুত প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করা যেন তারা আরও বেশি বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করে। আমরা বিশ্বাস করি যে বীমাফাই এমন একটি সমাধান প্রদান করে যা বাংলাদেশের বাজারে ব্যাপকভাবে প্রয়োজন। সঠিক কৌশল প্রয়োগ এবং ফোকাস ঠিক রেখে কাজ করতে পারলে আমাদের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে বীমাফাই সফল স্টার্টআপ হিসাবে বাংলাদেশি জনগণের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে সক্ষম হবে”।
এ বিষয়ে বিমাফাইর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আল্ভি নিজাম নাফি বলেন, স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের কাছ থেকে বিনিয়োগ পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। এই বিনিয়োগের মাধ্যমে আমাদের দেশব্যাপি ডিজিটাল বীমা সুবিধার পরিধি বাড়াতে সহায়তা করবে।
স্টার্টআপ বাংলাদেশ দেশে একটি টেকসই স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। সেই সুত্র ধরে, স্টার্টআপ বাংলাদেশ বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় স্টার্টআপগুলোতে বিনিয়োগ করছে এবং বীমাফাই-এ বিনিয়োগ করে সেই ঐতিহ্যকে অব্যাহত রেখেছে।
টিএইচ