রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, রেকর্ড মূল্যবৃদ্ধি, রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর একের পর এক নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বজুড়ে ডিজেলের তীব্র সরবরাহ সংকট চলছে। এমন পরিস্থিতিতে স্বস্তির বার্তা বয়ে এনেছে চীনের ঊর্ধ্বমুখী রপ্তানি।
করোনা মহামারী প্রতিরোধে আরোপিত সব ধরনের বিধিনিষেধ উঠে যেতে শুরু করায় গতিশীল হচ্ছে দেশটির অর্থনীতির চাকা।
দেশটির জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমস (জিএসি) জানায়, ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ের পর থেকে অস্বাভাবিক হারে কমতে থাকে চীনের ডিজেল রপ্তানি। এ ধারা বজায় ছিল গত অক্টোবর পর্যন্ত। তবে নভেম্বর থেকে পরিস্থিতি ইতিবাচক দিকে মোড় নেয়।
জিএসির তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে চীন সব মিলিয়ে ৫ কোটি ৪০ লাখ টন পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্য রপ্তানি করেছে। অথচ ২০২১ সালে ছয় কোটি এবং ২০২০ সালে ৬ কোটি ২০ লাখ টন রপ্তানি হয়েছিল। ২০২১ সালে জুলাই থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত ১৬ মাসে চীনের পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম রপ্তানি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কমেছে।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে দেশটির ডিজেল রপ্তানি নতুন রেকর্ড গড়েছে। রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৮ লাখ টনে। অথচ অক্টোবর মাসে রপ্তানি হয়েছিল মাত্র ১১ লাখ টন। ফলে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ের পর থেকে যে ঘাটতি দেখা দিয়েছিল, তা কমে ১ কোটি ৬০ লাখ টনেরও নিচে নেমেছে।
চীন রপ্তানি বাড়াতে সক্ষম হওয়ায় জ্বালানিটির বাণিজ্যেও স্থিতি ফিরতে শুরু করেছে। উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে আবার মজুত বাড়ার প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০২৩ সালের প্রথম কয়েক মাসের মধ্যে চীন সরকার আরো এক ধাপে রপ্তানি কোটা বাড়াতে পারে। এতে আগামী কয়েক মাসে ডিজেল রপ্তানি আরো চাঙ্গা হয়ে উঠবে। মূলত পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্য উৎপাদনে উৎসাহিত করতেই রপ্তানি কোটা বাড়াচ্ছে বেইজিং।
এদিকে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়ান পেট্রোলিয়াম পণ্য ও ডিজেলের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হতে যাচ্ছে। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়।
বিশ্লেষকরা জানান, নতুন করে পরিশোধিত জ্বালানি পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে বাজার অনিশ্চয়তা বাড়তে পারে। আরো ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠতে পারে ডিজেলের বাজারদর।
এআরএস