জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এর সভায় আমিন বাজার ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ শীর্ষক প্রকল্পের (১ম সংশোধিত) ডিপিপি অনুমোদন পেয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। সম্পূর্ণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৭২ কোটি চার লাখ টাকা। প্রকল্পের জন্য সরকার থেকে দেয়া হবে ১২৪৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। আর বাকি ২৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা যোগান দিবে ডিএনসিসি নিজে। জানুয়ারি ২০২০ থেকে ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ডিএনসিসি। গত মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
আমিন বাজার ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ইনসিনারেশন প্লান্টে প্রতিদিন তিন হাজার টন বর্জ্য পোড়ানোর মাধ্যমে ৪২.৫ মেগা ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। যা জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হবে। বর্জ্য পোড়ানোর ফলে উৎপন্ন ফ্লাই আশ সিমেন্ট ফ্যাক্টরীতে সিমেন্ট রো-মেটিরিয়াল হিসেবে এবং বটম আশ রোড কনস্ট্রাকশন পণ্য হিসেবে ব্যবহৃত হবে। মাথাপিছু বর্জ্য ডিসপোজালের হার বৃদ্ধি ও সংশ্লিষ্ট রোগের মাত্রা হ্রাস করা হবে। ল্যান্ডফিলের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও দুর্গন্ধের হার করা হবে হ্রাস। ল্যান্ডফিলে লিচেট ও মিথেন গ্যাসের হার কমানো হবে। মাটি, পানি ও বায়ূ দূষণের হার হ্রাস ও সর্বপুরি ঢাকা শহরকে পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা হলো এই প্রকল্পের লক্ষ্য।
আমিন বাজার ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ শীর্ষক প্রকল্পের ফলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের মাধ্যমে ভূমির উপর চাপ কমবে। পরিবেশ বান্ধব ও মানসম্মত উপায়ে বর্জ্য সংগ্রহ, পরিবহন ও নিরাপদে নির্দিষ্ট স্থানে অপসারণের ব্যবস্থাকরণের ব্যবস্থা করা হবে। বর্জ্য থেকে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ হ্রাস করাই এটির উদ্দেশ্য। বর্জ্যের পরিমান হ্রাস করে সম্পদে রূপান্তর করার লক্ষ্যে ইনসেনারেশন প্লান্ট স্থাপন করা হবে। রির্সোস রিকভারী সুবিধা স্থাপনের মাধ্যমে ল্যান্ডফিলে বর্জ্যের পরিমান কমিয়ে সম্পদে রুপান্তর হবে।
এই প্রকল্পে আশি একর ভূমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে ত্রিশ একর ভূমিতে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ইনসেনারেশন প্লান্ট স্থাপন হবে। বাকি পঞ্চাশ একর ভূমিতে মেডিক্যাল বর্জ্য, ই-বর্জ্য ও ধ্বংসাবশেষের ব্যবস্থাপনার জন্য পরিবেশ বান্ধব ল্যান্ডফিল স্থাপিত হবে। ভারী যান-যন্ত্রপাতি ক্রয় (হাইড্রোলিক এক্সকেভেটর-৩টি, বুলডোজার, চেইনডোজার-৬টি, লং আর্ম এক্সকেভটর-২টি)। ভূমি উন্নয়ন ।রাস্তা ও বাঁধ নির্মান।
প্রকল্প সম্পর্কে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের স্বপ্ন দেখছে। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন নিশ্চিত হবে। বর্জ্য থেকে উৎপাদন হবে বিদ্যুৎ। এর ফলে ফেলে দেওয়া বর্জ্য পরিণত হবে সম্পদে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশ বান্ধব ও মান সম্মত উপায়ে বর্জ্য সংগ্রহ, পরিবহন, নির্দিষ্ট নিরাপদ স্থানে বর্জ্য ডিস্পোজালের ব্যবস্থা করা হবে। এর ফলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাজনিত কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ হ্রাস হবে।’
এআরএস