ঋণগ্রহীতাদের তথ্য সঠিক না দিলে জরিমানা শাস্তি

আমার সংবাদ ডেস্ক প্রকাশিত: মার্চ ৫, ২০২৫, ০৯:০৭ পিএম

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ তথ্য ভান্ডারে (সিআইবি) যথাসময়ে ঋণগ্রহীতাদের সমুদয় ও সঠিক তথ্য পাঠাতে ব্যর্থ হলে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক এবং ফাইন্যান্স কোম্পানির বিরুদ্ধে। প্রয়োজনীয় তথ্য পাঠানোর ব্যর্থতার দায়ে যেসব কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করা হবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিআইবিতে ঋণগ্রহীতাদের নির্ভুল এবং হালনাগাদ তথ্য নিয়মিতভাবে পাঠাতে ও জালিয়াতি ঠেকাতে এসব পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ বিষয়ে বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে সার্কুলারে জানানো হয়েছে।

সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংক খাতের ঋণ শৃঙ্খলা সুসংহত করার লক্ষ্যে সিআইবিতে রক্ষিত ঋণ তথ্যের গুণগত মান বজায় রাখা ও হালনাগাদ ঋণ তথ্য সংগ্রহ করা আশব্যক। এ লক্ষ্যে ঋণগ্রহীতার ঋণের মাসিকভিত্তিক তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে সিআইবি কার্যক্রমকে গতিশীল ও কার্যকর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সিআইবিকে আরও অধিকতর কার্যকর করার লক্ষ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোকে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নির্দেশনা অনুযায়ী, এখন থেকে প্রতিটি ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিকে তাদের ঋণগ্রহীতাদেরকে সব ঋণতথ্য মাসিক ভিত্তিতে পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে অনলাইনের মাধ্যমে সিআইবিতে জমা দিতে হবে। এর পরবর্তী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সংশোধন বিয়োজন বা সংযোজনের কাজ সম্পন্ন করে অনলাইনে সিআইবিতে পুনরায় জমা দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হালনাগাদের সঠিক তথ্য দাখিলে ব্যর্থতার কারণ উল্লে­খপূর্বক বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে তিন দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে হবে। ওই ব্যাখ্যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে গ্রহণযোগ্য না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা ফাইন্যান্স কোম্পানিকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। একই সঙ্গে এ ঘটনার জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জরিমানার অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা ফাইন্যান্স কোম্পানির হিসাব থেকে কর্তন করে আদায় করা হবে। ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোকে জরিমানার অর্থ আলাদাভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিতে হবে না। পাশাপাশি দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানি।

বর্তমানে সিআইবিতে সর্বনিম্ন এক টাকার ঋণগ্রহীতাদের তথ্যও রয়েছে। সর্বোচ্চ সব ঋণগ্রহীতাদের তথ্যও আছে। নতুন ঋণ নিতে হলে গ্রাহকের সিআইবি থেকে ঋণের মান সম্পর্কে তথ্য নিতে হয়। কোনো গ্রাহকের ঋণ খেলাপি হলে তাকে আর নতুন ঋণ দেওয়া হয় না। কিন্তু বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এই নীতিমালা সঠিকভাবে পালিত হয়নি বলে ঋণ খেলাপিরাও নতুন ঋণ পেয়েছেন। এর মাধ্যমে তারা ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোতে লুটপাট করেছে। এখন ঋণ খেলাপিদের নতুন ঋণ দেওয়া বন্ধ ও ঋণ যাতে কোনো একক গ্রাহকের কাছে কেন্দ্রীভূত হয়ে ব্যাংকগুলোে ঝুঁকিতে না পড়ে সেজন্য এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আরএস