সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (জিএসটি) গুচ্ছভুক্ত ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এরই অংশ শনিবার (১৩ আগস্ট) শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে অনুষ্ঠিত হয় এই পরীক্ষা।
ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের সাথে কেন্দ্রে এসেছিলেন কারও মা, বাবা, কারওবা ভাই বোনসহ অন্য আত্মীয়স্বজন। সবার প্রার্থনা একটাই পরিবারের সদস্যটি যেন ভালোভাবে পরীক্ষা দিয়ে চান্স পায়।
তেমনি একজন ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীর মা হাসিনা বেগম। তিনি পেশায় একজন গৃহিণী। তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসকে নিয়ে সুনামগঞ্জ সদর থেকে গুচ্ছ বি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা দিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছেন।
মেয়ে জান্নাতুলকে পরীক্ষার হলে পাঠিয়ে মা হাসিনা বেগম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ‘ই’ এর টংয়ে বসে দোয়ার ছোট্ট একটি বইয়ের কপি হাতে নিয়ে মনোযোগ দিয়ে পড়ছিলেন। সাথে প্রার্থনা করছিলেন মেয়ের ভালো পরীক্ষার জন্য।
সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কথা বললে হাসিনা বেগম জানান, স্বামীর ব্যবসা নেই কয়েকমাস ধরে। অভাব অনটনের মাঝেও পাঁচ সন্তানকে পড়ালেখা করিয়েছেন। মেয়ে জান্নাত নিজের এলাকাতে টিউশনি করে নিজেই পড়ালেখার খরচ যোগায়। টাকা পয়সার অভাবে মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কোচিং করাতে পারেননি। মেয়ে নিজের চেষ্টায় এতটুকু এসেছে।
তবে তিনি দোয়া করছিলেন, মেয়ের পরীক্ষা যেন ভালো হয়। মেয়ে জান্নাতের স্বপ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। ভালো কোনো চাকরি করে পরিবারে স্বচ্ছলতা নিয়ে আসবে। মেয়ে সুনামগঞ্জ সরকারী কলেজে পড়াশোনা করেছেন। স্কুল ও কলেজের ছবি আকাঁ, বিতর্কসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অনেক পুরুষ্কারও পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
এদিন হাসিনা বেগমের মতো অনেক মা-বাবা ছেলে ও মেয়েদেরকে নিয়ে পরীক্ষার উদ্দেশে এসেছিলেন শাবি ক্যাম্পাসে। বেলা ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ক্যাম্পাসের চারটি শিক্ষাভবনে এ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এতে শাবিপ্রবি কেন্দ্রে আবেদন করেন ২৩৩১ জন শিক্ষার্থী।
কিন্তু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন ২২৩২ জন, সে হিসাবে প্রায় ৯৫ শতাংশ ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থী উপস্থিত হয়েছেন। ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ইশরাত ইবনে ইসমাইল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এআই