বাংলাদেশের ছয়টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কৃষি বিষয়ে ডিগ্রি প্রদানকারী মোট ৮ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মোট ১০টি কেন্দ্রের মধ্যে সর্বশেষ ৫ টি কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী উপস্থিতি ছিল প্রায় ৮৩ শতাংশ শিক্ষার্থী।
এবার কৃষি বিষয়ে পাঠদানকারি ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ হাজার ৫৩৯ টি আসনের বিপরীতে ১০ টি কেন্দ্রে ৭৯ হাজার ১৫৯ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার ছিল ৮০ শতাংশ। কৃষির বিভিন্ন বিষয়ে ভর্তি হতে এবার প্রতি আসনের বিপরীতে ২২ জনের পরীক্ষা দেওয়ার কথা থাকলেও ৮৩ শতাংশ উপস্থিত থাকায় এখন প্রতি আসনের বিপরীতে ১৮ জনের প্রতিযোগিতা থাকবে।
শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টা ৩০ মিনিটে শুরু হওয়া পরীক্ষা শেষ হয় ১২ টা ৩০ মিনিটে। পদার্থ, রসায়ন, গণিতে ২০ নম্বর হিসেবে মোট ৬০, জীববিজ্ঞানে ৩০ এবং ইংরেজিতে ১০ নম্বর সহ মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়েছে।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে ঘণ্টাব্যাপী পরীক্ষার পর ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী সমর্পিতা চক্রবর্তী বলেন, পরীক্ষা ভালো হয়েছে। প্রশ্নপত্র কঠিন মনে হয়নি।
ভর্তি পরীক্ষার্থী রাকিব হাসান বলেন, পরীক্ষার পরিবেশ বেশ ভালো ছিল। পরীক্ষাও ভালো দিয়েছি। আশা করছি কৃষি বিষয়ে পড়ার সুযোগ পাবো।
পরীক্ষার হল পরিদর্শন করে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার বলেন, অত্যন্ত সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরিদর্শনের পর মনে হচ্ছে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল। এছাড়াও এবছর যেসব পরীক্ষার্থীর আবেদন সঠিক ছিল তাদের সবাইকেই পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শেরেবাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. হারুন-উর-রশীদ জানান, মোট ১০ টি কেন্দ্রের তথ্য হাতে এসেছে। তথ্য অনুযায়ী ৭৯ হাজার ১৫৯ জন শিক্ষার্থীর মাঝে পরীক্ষায় উপস্থিত ছিল ৬৫ হাজার ৩১৭ জন। যা মোট ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীর প্রায় ৮৩ শতাংশ।
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা পরিচালনা করছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
এদিকে ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে ভোর থেকেই সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাজ সাজ রব পড়ে যায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা অভিভাবকসহ ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়। পরীক্ষা শুরুর পর বিভিন্ন হল পরিদর্শন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার। তাঁর সাথে পরিদর্শনে ছিলেন, রেজিস্ট্রার মো. বদরুল ইসলাম শোয়েব, সিকৃবির ডিন কাউন্সিলের আহবায়ক এবং কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ রাশেদ আল মামুন, ভেটেরিনারি এনিম্যাল ও বায়োমেডিক্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. এম. রাশেদ হাসনাত, কৃষি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. আসাদ-উদ-দৌলা, মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মৃত্যুঞ্জয় কুন্ড, কৃষি অর্থনীতি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. শাহ আলমগীর, বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. মেহেদী হাসান খান, পোস্ট গ্রাজুয়েট স্টাডিজ অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. কাজী মেহতাজুল ইসলাম, পরিচালক (ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা) প্রফেসর ড. মো. মোস্তফা সামছুজ্জামান, প্রক্টর ড. তরিকুল ইসলাম, জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক মো. আনিছুর রহমান প্রমুখ। ঢাকা থেকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মিজানুল হক কাজল এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার সুমন কুমার দাস সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রসমূহে পরিদর্শন দলের সাথে যুক্ত ছিলেন।
তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৯ শতাংশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৬ শতাংশ, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮২ শতাংশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮২ শতাংশ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮১ শতাংশ, ইডেন মহিলা কলেজে ৮১ শতাংশ, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৭ শতাংশ, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়িন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৫ শতাংশ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০ শতাংশ এবং খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে খুলনায় অবস্থিত খুলনা কলেজিয়েট গার্লস স্কুলে ৮৬ শতাংশ সহ ১০ টি কেন্দ্রে গড়ে ৮৩ শতাংশ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তুলনায় আসন সংখ্যার সাথে বেড়েছে পরীক্ষায় অংশগ্রহণেচ্ছু শিক্ষার্থীর সংখ্যা। গত কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৩৪ হাজার ৮৪৬ জন পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেলেও এবার সুযোগ পেয়েছে ৭৯ হাজার ১৫৯ জন এবং ৩ হাজার ৪১৯ টি আসনের স্থলে বর্তমানে আসন সংখ্যা আরো ১২০ টি বৃদ্ধি পেয়ে মোট আসন হয়েছে ৩ হাজার ৫৩৯ টি।
এসএম