টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেনকে অবরুদ্ধ করে কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন তৃতীয় শ্রেণির (অ্যাডহক) কর্মচারীরা।
বুধবার (২ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এডহকে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণির ২২ জন কর্মচারী চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, দ্বিতীয় দিনেও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ তালাবদ্ধ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হয়ে আছেন মাভাবিপ্রবির ভিসি প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, গত ৩০ অক্টোবর তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি নিয়ে উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
তৃতীয় শ্রেণির (অ্যাডহক) কর্মচারীদের দাবিসমূহ: তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে পরবর্তী বাছাই বোর্ড দেয়া; বিজ্ঞাপিত পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের নিয়োগ প্রদান; অভ্যন্তরীণ প্রার্থীদের শুধুমাত্র মৌখিক ভাইভা বোর্ডের ব্যবস্থা করা; বিজ্ঞাপিত ১৫টি পদের বিপরীতে ২২ জন এডহক ভিত্তিতে নিয়োজিত কর্মচারীদের স্থায়ীকরণ করা; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের অসামঞ্জস্য পদকে সামঞ্জস্য করে নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা; যথাসময়ে তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের আপগ্রেডেশনের ব্যবস্থা করা; ড্রাইভারদের অধিকাল ভাতাসহ টিএডিএ প্রদান করা; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের জন্য পৃথক মিনিবাসের ব্যবস্থা করা; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ টাঙ্গাইলের লোকদের নিয়োগ প্রদান করা; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের নিয়োগে পোষ্য কোঠা নির্ধারণ করা; বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য মোটর কার ও মোটরসাইকেলের জন্য কর্পোরেট লোনের ব্যবস্থা করা; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির জন্য একটি কার্যালয়ের ব্যবস্থা করা; তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় রেশিও অনুযায়ী গেস্ট হাউজের ব্যবস্থা করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়িচালক এবং কারিগরি কর্মচারীদের দাফতরিক সাজ-পোশাকের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের পরিপত্র এবং বাংলাদেশের গেজেট অনুযায়ী ব্যবস্থা করা; এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণীর কোনো চাকরিজীবী চাকরিরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে মৃত কর্মচারীর পরিবার থেকে একজন তার শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি প্রদান করা।
তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সভাপতি এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী সমিতির কার্যকরী পরিষদের ৩৯তম সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তৃতীয় শ্রেণির সকল কর্মচারী কর্মবিরতি পালন করবেন। তবে অ্যাম্বুলেন্স, ছাত্র-ছাত্রী সংশ্লিষ্ট এবং জরুরিসেবাসমূহ চালু থাকবে। এছাড়া অন্যান্য সকল পরিবহন সেবা বন্ধ থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, পোস্ট ছাড়াই তারা এডহকে নিয়োগ পেয়েছিল বিগত উপাচার্যের সময়ে। গতকাল ১৪টি পদে নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। কিন্তু তারা তাতে অংশগ্রহণ না করে বিভিন্ন দাবি নিয়ে আমাকে অবরুদ্ধ করে কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
এ ঘটনায় ইউজিসি কর্তৃপক্ষকে বলে ২২টি পদের জন্য নিয়োগের ব্যবস্থা করে তাদের জানানো হলেও তারা তাদের অবস্থানে অনড় রয়েছে। দুইদিন হলো আমাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
টিএইচ