চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আওয়ামীপন্থী হলুদ দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী পর্ষদ স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্বাচন চেয়ে আহ্বায়ক বরাবর চিঠি পাঠিয়েছে ২০১ জন শিক্ষক। শনিবার (১২ নভেম্বর) চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দলটির আহ্বায়ক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী।
আগামী বছর ২০২৩ সালের শেষ কিংবা ২০২৪ সালের শুরুতে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কমিটির নির্বাচন চেয়েছেন আওয়ামীপন্থী হলুদ দলের শিক্ষকবৃন্দ।
প্রতি ২ বছর পর পর এর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও এই কমিটির সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৭ সালে। দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায় বিচ্ছিন্ন অবস্থানে রয়েছে দলটির সদস্যরা। এই অচল অবস্থা কাটিয়ে সাংগঠনিক শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্বাচন চেয়ে আহ্বায়ক বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে।
আহবায়ক বরাবর প্রেরিত চিঠিতে বলা হয়, ২০১৭ সালে দুই বছরের জন্য নির্বাচিত স্ট্যান্ডিং কমিটির মেয়াদ ২০১৯ সালেই শেষ। নির্বাচিত ১৫ জন সদস্যের মধ্যে ৬ জন সদস্য অবসর গ্রহণ, শিক্ষা ছুটি প্রভৃতি কারণে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না । অপরদিকে , অনেক নবীন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন যাদের প্রায় সবাই হলুদ দলের ভাবাদর্শী ।
মনোনয়নে দলীয় পছন্দের অগ্রাধিকার দেওয়া হয় না অভিযোগ তুলে চিঠিতে বলা হয়, মেয়াদোত্তীর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটি হলুদ দলের বর্তমানে কর্মরত শিক্ষকদের কোন ভাবেই প্রতিনিধিত্বশীল নয়। যার প্রমাণ সাম্প্রতিক সময়ে তাঁদের দেয়া মনোনয়নের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীর নির্বাচনে ভরাডুবি । অনেক প্রার্থী স্ট্যান্ডিং কমিটির পছন্দের প্রার্থীর বিরোধিতা করেও জয় লাভ করেছেন। যা প্রমাণ করে এই কমিটির প্রতি সাধারণ সদস্যদের আস্থা নেই।
চিঠিতে আরো বলা হয়, আগামী বছরের শেষের দিকে দেশে জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। দেশে বর্তমানে বিএনপি ও জামাতসহ ধর্মান্ধ প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য পুনরায় নানান ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত। এদের সাথে পাকিস্তানসহ প্রতিক্রিয়াশীল বিদেশী শক্তিও সক্রিয় রয়েছে । এ অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আদর্শিক শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ করার জন্য প্রয়োজন আস্থাশীল নতুন কমিটি।
দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি উল্লেখ করে হলুদ দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির বর্তমান সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর বলেন, ৩ বছর হয়ে গেলো কমিটির মেয়াদ শেষ। কিন্তু তারা নির্বাচন না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছামত প্রার্থী বিভিন্ন পর্ষদে মনোনয়ন দিয়েছেন। লজ্জার ব্যাপার হলো তাদের হার হয়েছে। যা প্রমাণ করে এই কমিটির উপরে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের আস্থা নেই। সামনে অনেকগুলো পর্ষদের নির্বাচন হবে। মেয়াদহীন স্ট্যান্ডিং কমিটি যদি সেখানেও খামখেয়ালি ভাবে মনোনয়ন দেয় তাহলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। তাই দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য আমরা আহবায়ক কে চিঠি দিয়েছি।
চিঠিতে স্বাক্ষর করা আরেক শিক্ষক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন বলেন, ২ বছরের কমিটি ৫ বছর ধরে চলছে। নতুন অনেক শিক্ষক এসেছে যারা আওয়ামী ভাবাদর্শের। তাদের সাথেও এই কমিটির সমন্বয় নেই। তাছাড়া এই কমিটির ৬ জনই এখন দায়িত্ব পালন করেন না। তাই নির্বাচন হওয়া জরুরি।
এ নিয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ড. মো. সিকান্দর চৌধুরী বলেন, চিঠি আমি পেয়েছি। নির্বাচন দেওয়ার ব্যাপারে আমাদেরও চিন্তাভাবনা রয়েছে। তবে সদস্য সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে। স্বাক্ষরকারী ২০১ জনের কয়েকজন আমাদের সংগঠনের নয়।
এসএম